পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ձՀ8 : * তোমার যে নিজের হিত, তাহাও সাধিত হয়। অতএব মোটের উপর stfു ഋ് o অতএব, আত্মপ্রীতির সামঞ্জস্ত সম্বন্ধে আমি যে প্রথম নিয়ম বলিয়াছি, অর্থাৎ পরের অনিষ্ট হয়, সেখানে আত্মহিত পরিত্যাজ্য, তাহার সম্প্রসারণ ও সীমাবদ্ধ হিতবাদীদিগের এই নিয়ম দ্বিতীয় নিয়মের স্বরূপ গ্রহণ করিতে পার । , - আর একটি তৃতীয় নিয়ম আছে। অনেক সময় আমার আত্মছিঙ যতদূর জামার আয়ত্ত, পরের হিত তাদৃশ নহে। উদাহরণস্বরূপ দেখ, আমরা যত সহজে আপনার । মানসিক উন্নতি সাধিত করিতে পারি, পরের তত সহজে পারি না। এ স্থলে অঙ্গে । আপনার মানসিক উন্নতির সাধনই কর্তব্য, কেন না সিদ্ধির সম্ভাবনা বেশী। পুনশ্চ, অনেক । স্থলে আপনার হিত আগে সাধিত না করিলে পরের হিত সাধিত করিতে পারা যায় না। । এ স্থলেও পরপক্ষ অপেক্ষ আত্মপক্ষই অবলম্বনীয়। আমার মানসিক উন্নতি না হইলে । আমি তোমার মানসিক উন্নতি সাধিত করিতে পারিব না ; অতএব এখানে আগে আপনার । হিত অবলম্বনীয়। যদি তোমাকে আমাকে এককালে শত্রুতে আক্রমণ করে, তবে আগে আপনার রক্ষণ না করিলে, আমি তোমাকে রক্ষা করিতে পারিব না । চিকিৎসক নিজে রুগ্নশয্যাশায়ী হইলে, আগে আপনার আরোগ্যসাধন না করিলে, পরকে আরোগ্য দিতে পারেন না। এ সকল স্থানেও আত্মহিতই আগে সাধনীয়। এক্ষণে, তোমাকে যাহা বুঝাইয়াছিলাম, তাহ আবার স্মরণ কর। প্রথম, আত্মপর অভেদজ্ঞানই যথার্থ প্রীতির অনুশীলন । দ্বিতীয়, তদ্বারা আত্মপ্রীতির সমুচিত ও সীমাবদ্ধ অনুশীলন নিষিদ্ধ হইতেছে না, কেন না, আমিও সৰ্ব্বভূতের অন্তর্গত। তৃতীয়, বৃত্তির অনুশীলনের চরম উদ্দেশু—সকল বৃত্তিগুলিকে ঈশ্বরমুখী করা। অতএব যাহা ঈশ্বরোদিষ্ট কৰ্ম্ম, তাহাই অনুষ্ঠেয়। ঈদৃশ অমুষ্ঠেয় কর্মের অনুবর্তনে কখন অবস্থা বিশেষে আত্মহিত, কখন অবস্থা বিশেষে পরহিতকে প্রাধান্ত দিতে হয় । তাহাতে হিন্দুধৰ্ম্মোক্ত সাম্যজ্ঞানের বিঘ্ন হয় না । তুমি যেখানে আত্মরক্ষার অধিকারী, পরেও সেইখানে সেইরূপ আত্মরক্ষার অধিকারী । যেখানে তুমি পরের জন্ত আত্মবিসর্জনে বাধ্য, পরেও সেইখানে তোমার জন্য আত্মবিসর্জনে বাধ্য। এই জ্ঞানই সাম্যজ্ঞান। অতএব আমি যে সকল বর্জিত কথা বলিলাম, তদ্বারা গীতোক্ত সাম্যজ্ঞানের কোন হানি হইতেছে না ।