幾 ক্রোড়পত্র। ক। - (মল্লিখিত “ধৰ্ম্মজিজ্ঞাসা” নামক প্রবন্ধ হইতে কিয়দংশ উদ্ধৃত করা গেল। ) ধৰ্ম্ম শব্দের আধুনিক ব্যবহার-জাত কয়েকটা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ তাহার ইংরেঞ্জি . প্রতিশব্দের দ্বারা আগে নির্দেশ করিতেছি, তুমি বুঝিয়া দেখ। প্রথম, ইংরেজ । o Religion বলে, আমরা তাহাকে ধৰ্ম্ম বলি, যেমন হিন্দুধৰ্ম্ম, বৌদ্ধধৰ্ম্ম, খৃষ্টীয় ধৰ্ম্মী দ্বিতীয়, ইংরেজ যাহাকে Morality বলে, আমরা তাহাকেও ধৰ্ম্ম বলি, যথা অমুক কর্ম “ধৰ্ম্ম-বিরুদ্ধ” “মানবধৰ্ম্মশাস্ত্র” “ধৰ্ম্মসূত্র” ইত্যাদি । আধুনিক বাঙ্গালায়, ইহার একটি নাম প্রচলিত আছে—নীতি। বাঙ্গালি একালে আর কিছু পারুক আর না পাঞ্জ “নীতিবিরুদ্ধ” কথাট। চট্ করিয়া বলিয়া ফেলিতে পারে। তৃতীয়, ধৰ্ম্ম শব্দে virtég বুঝায়। Virtue ধৰ্ম্মাত্ম মনুষের অভ্যস্ত গুণকে বুঝায় ; নীতির বশবৰ্ত্তী অভ্যাসেঞ্জ উহ। ফল। এই অর্থে আমরা বলিয়া থাকি অমুক ব্যক্তি ধাৰ্ম্মিক, অমুক ব্যক্তি অধাৰ্মিক এখানে অধৰ্ম্মকে ইংরেজিতে wice বলে। চতুর্থ, রিলিজন বা নীতির অনুমোদিত ষ্ট্রে কাৰ্য্য তাহাকেও ধৰ্ম্ম বলে, তাহার বিপরীতকে অধৰ্ম্ম বলে। যথা দান পরম ধৰ্ম্ম, অহিংসা পরম ধৰ্ম্ম, গুরুনিন্দ পরম অধৰ্ম্ম । ইহাকে সচরাচর পাপপুণ্যও বলে। ইংরেজিতে এই অধৰ্ম্মের নাম “sin”—পুণ্যের এক কথায় একটা নাম নাই—“good deed” বা তদ্রুপ, বাগবাহুল্য দ্বার সাহেবের অভাব মোচন করেন। পঞ্চম, ধৰ্ম্ম শব্দে গুণ বুঝায়, যথা: চৌম্বুকের ধৰ্ম্ম লৌহাকর্ষণ। এস্থলে যাহা অর্থাস্তরে অধৰ্ম্ম, তাহাকেও ধৰ্ম্ম বলা যায় । যথা, “পরনিন্দা—স্কুদ্রচেতাদিগের ধৰ্ম্ম।” এই অর্থে মনু স্বয়ং “পাষণ্ড ধর্মের” কথ লিখিয়াছেন, যথা— - “হিংস্রাহিংস্রে মূছকুরে, ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মাবৃতামৃতে । যদ্যস্ত সোহদধাৎ সর্গে তত্তস্ত স্বয়মাবিশৎ ॥” পুনশ্চ– “পাষণ্ডগণধর্ধাংশ্চ শাস্থেংস্মিমুক্তবান মহঃ ” আর ষষ্ঠত, ধৰ্ম্ম শব্দ কখন কখন, আচার বা ব্যবহারার্থে প্রযুক্ত হয়। ময় এই অর্থেই বলেন,— “দেশধৰ্ম্মান জাতিধৰ্ম্মান কুলধৰ্ম্মাংশ্চ শাশ্বতান ।”
পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৬০
অবয়ব