সপ্তম অধ্যায় –সামঞ্জস্য ও সুখ । ఉe ছাড়িৰ কেন ? তাহান্ন মদ্যপানের আকাঙ্ক্ষা আজিও পরিতৃপ্ত হয় নাই—তৃষ্ণ বলবতী আছে। কিন্তু যাহার মাত্র পূর্ণ হইয়াছে, সে জানে যে পৃথিবীতে যত ছুঃখ আছে, মদ্যপানের অপেক্ষ বড় হুঃখ বুঝি আর নাই। এ সকল কথা মদ্যপ সম্বন্ধেই যে খাটে, এমত নহে। সৰ্ব্বপ্রকার ইন্দ্রিয়পরায়ণের পক্ষে খাটে। কামুকের অনুচিত অনুশীলনের ফলও একটি রোগ। তাহারও চিকিৎসা আছে এবং পরিণামে অকালমৃত্যু আছে। এইরূপ একটি রোগীর কথা আমি আমার কোন চিকিৎসক বন্ধুর কাছে এইরূপ শুনিলাম যে, তাহাকে হাসপাতালে লইয়া গিয়া তাহার হাত পা বাধিয়। রাখিতে হইয়াছিল, এবং সে ইচ্ছামত অঙ্গ সঞ্চালন করিতে না পারে, এ জন্ত লাইকরলিটি দিয়া তাহার অঙ্গের স্থানে স্থানে ঘা করিয়া দিতে হইয়াছিল। ঔদরিকের কথা সকলেই জানে। আমার নিকট এক জন ঔদরিক বিশেষ পরিচিত ছিলেন। তিনি ঔদরিকতার অনুচিত অনুশীলনের ও পরিতৃপ্তি জন্য গ্রহণী রোগে আক্রান্ত হইয়াছিলেন। তিনি বেশ জানিতেন যে তুষ্পচনীয় দ্রব্য আহার করিলেই তাহার পীড়া বৃদ্ধি হইবে । সে জন্ত লোভ সম্বরণের যথেষ্ট চেষ্টা করিতেন, কিন্তু কোন মতেই কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই। বলা বাহুল্য যে তিনি অকালে মৃত্যুগ্রাসে পতিত হইলেন। বাপু হে ! এই সকল কি মুখ ? ইহার আবার প্রমাণ প্রয়োগ চাই ? শিস্য। এখন বোধ হয়, আপনি যাহাকে সুখ বলিতেছেন তাহ বুঝিয়াছি। ক্ষণিক যে সুখ তাহা সুখ নহে। গুরু। কেন নহে ? আমি জীবনের মধ্যে যদি একবার একটি গোলাপ ফুল দেখি, কি একটি গান শুনি, আর পরক্ষণেই সব ভুলিয়া যাই, তবে সে মুখ বড় ক্ষণিক সুখ, কিন্তু সে সুখ কি সুখ নহে ? তাহা সত্যই সুখ । শিষ্য। যে সুখ ক্ষণিক অথচ যাহার পরিণাম স্থায়ী দুঃখ, তাহ সুখ নহে, দুঃখের প্রথমাবস্থা মাত্র। এখন বুঝিয়াছি কি ? গুরু। এখন পথে আসিয়াছ । কিন্তু এ ব্যাখ্যা ত ব্যতিরেকী। কেবল ব্যতিরেকী ব্যাখ্যায় সবটুকু পাওয়া যাইবে না। সুখ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যাইতে পারে— (১) স্থায়ী, (২) ক্ষণিক । ইহার মধ্যে— শিষ্য। স্থায়ী কাহাকে বলেন ? মনে করুন কোন ইন্দ্রিয়াসক্ত ব্যক্তি পাচ বৎসর ধরিয়া ইন্দ্রিয়-সুখভোগ করিতেছে। কথাটা নিতান্ত অসম্ভব নহে। তাহার সুখ কি ক্ষণিক ? গুরু। প্রথমত, সমস্ত জীবনের তুলনায় পাঁচ বৎসর মুহূৰ্ত্ত মাত্র। তুমি পরকাল মান, না মান, আমি মানি। অনন্ত কালের তুলনায় পাচ বৎসর কতক্ষণ ? কিন্তু আমি wn &
পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪১
অবয়ব