Šo ধৰ্ম্মতত্ত্ব উৰ্ব্বশী মেনকা রম্ভাদির নৃত্যসমাকুলিত, নন্দন-কানন-কুমুম-মুবাস সমুল্লাসিত স্বৰ্গ মানি না। হিন্দুধৰ্ম্ম মানি, হিন্দুধর্মের বখামি”গুল মানি না। আমার শিদিগেরও মানিতে শিক্ষ। আমার মত শিল্পের মানিবার কোন সম্ভাবনা দেখি না। সম্প্রতি পরকালের । ছাড়িয়া দিয়া, ইহকাল লইয়া স্বখের যে ব্যাখ্যা করিতেছিলেন, তাহার স্বত্র পুনগ্রহণ গুরু। বোধ হয় এতক্ষণে বুঝাইয়া থাকিব, যে পরকাল বাদ দিয়া কথা কহিলেও, । কোন কোন মুখকে স্থায়ী কোন কোন মুখের স্থায়িত্বাভাবে তাহাকে ক্ষণিক বলা যাইতে । পারে । শিষ্য। বোধ হয় কথাটা এখনও বুঝি নাই। আমি একটা টপ্পা শুনিয়া আসিলাম, কি একখানা নাটকের অভিনয় দেখিয়া আসিলাম । তাহাতে কিছু আনন্দ লাভও করিলাম। সে মুখ স্থায়ী ন ক্ষণিক ? গুরু। যে আনন্দের কথা তুমি মনে ভাবিতেছ, বুঝিতে পারিতেছি, তাহা ক্ষণিক বটে, কিন্তু চিত্তরঞ্জিনী বৃত্তির সমুচিত অনুশীলনের যে ফল, তাহ৷ স্থায়ী সুখ। সেই স্থায়ী সুখের অংশ বা উপাদান বলিয়া, ঐ আনন্দটুকুকে স্থায়ী মুখের মধ্যে ধরিয়া লইতে হইবে । মুখ যে বৃত্তির অনুশীলনের ফল, এ কথাটা যেন মনে থাকে। এখন বলিয়াছি যে, কতকগুলি বৃত্তির অনুশীলনজনিত যে মুখ, তাহ অস্থায়ী। শেষোক্ত সুখও আবার দ্বিবিধ ; (১) যাহার পরিণামে দুঃখ, (২) যাহা ক্ষণিক হইলেও পরিণামে দুঃখশুন্য। ইন্দ্রিয়াদি নিকৃষ্ট বৃত্তি সম্বন্ধে পূৰ্ব্বে যাহা বলা হইয়াছে, তাহাতে ইহা অবশ্ব বুঝিয়াছ যে, এই বৃত্তিগুলির পরিমিত অনুশীলনে দুঃখশুন্ত মুখ, এবং এই সকলের অসমুচিত অনুশীলনে যে সুখ, তাহারই পরিণাম দুঃখ । অতএব সুখ ত্রিবিধ। (১) স্থায়ী । (২) ক্ষণিক কিন্তু পরিণামে দুঃখশুন্ত। (৩) ক্ষণিক কিন্তু পরিণামে দুঃখের কারণ। শেষোক্ত মুখকে মুখ বলা অবিধেয়,—উহা দুঃখের প্রথমাবস্থ৷ মাত্র। সুখ তবে, (১) হয় যাহা স্থায়ী (২) নয়, যাহা অস্থায়ী অথচ পরিণামে দুঃখশুন্ত। আমি যখন বলিয়াছি যে, মুখের উপায় ধৰ্ম্ম, তখন এই অর্থেই মুখ শব্দ ব্যবহার করিয়াছি। এই ব্যবহারই এই শব্দের যথার্থ ব্যবহার, কেন না, যাহা বস্তুত দুঃখের প্রথমাবস্থা, তাহাকে ভ্রান্ত
পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৮
অবয়ব