বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§§ ধৰ্ম্মতত্ত্ব বলা যায়। স্বাধীনতা দেশী কথা নহে, বিলাতী আমদানি । লিবার্ট শব্দের অনুবাদ। ইহার এমন তাৎপর্ঘ্য নহে যে রাজা স্বদেশীয় হইতে হইবে। স্বদেশীয় রাজা অনেক সময়ে স্বাধীনতার শত্ৰু, বিদেশীয় রাজা অনেক সময়ে স্বাধীনতার মিত্র। ইহার অনেক উদাহরণ দেওয়া বাইতে পারে। ইহা ধৰ্ম্মোন্নতির পক্ষে নিতান্ত প্রয়োজনীয়। অতএব আত্মরক্ষা, স্বজনরক্ষা, এবং স্বদেশরক্ষার জন্য যে শারীরিক বৃত্তির অনুশীলন তাহ সকলেরই কর্তব্য।’ শিল্প। অর্থাৎ সকলেরই যোদ্ধা হওয়া চাই । སྙན་ ༣ གྷལ་་ ༢༔ ༔ গুরু। তাহার অর্থ এমন নহে যে সকলকে যুদ্ধব্যবসায় অবলম্বন করিডে হইবে। কিন্তু সকলের প্রয়োজনানুসারে যুদ্ধে সক্ষম হওয়া কর্তব্য। স্কুজ ক্ষুদ্র রাজ্যে সকল বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষকেই যুদ্ধব্যবসায়ী হইতে হয়, নহিলে সেনাসংখ্যা এত অল্প হয় যে, বৃহৎ রাজ্য সে সকল ক্ষুত্র রাজ্য অনায়াসে গ্রাস করে। প্রাচীন গ্ৰীকনগরী সকলে সকলকেই এই জন্য যুদ্ধ করিতে হইত। বৃহৎ রাজ্যে বা সমাজে, যুদ্ধ শ্রেণীবিশেষের কাজ বলিয়া নির্দিষ্ট থাকে। প্রাচীন ভারতবর্ষের ক্ষত্রিয়, এবং মাধ্যকালিক ভারতবর্ষের রাজপুতেরা ইহার উদাহরণ। কিন্তু তাহার ফল এই হয় যে সেই শ্রেণীবিশেষ আক্রমণকারী কর্তৃক বিজিত হইলে, দেশের আর রক্ষা থাকে না। ভারতবর্ষের রাজপুতের পরাভূত হইবামাত্র, ভারতবর্ষ মুসলমানের অধিকারভুক্ত হইল। কিন্তু রাজপুত ভিন্ন ভারতবর্ষের অন্য জাতি সকল যদি যুদ্ধে সক্ষম হইত, তাহা হইলে ভারতবর্ষে সে তুর্দশা হইত না। ১৭৯৩ সালে ফ্রান্সের সমস্ত বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষ অস্ত্ৰধারণ করিয়া সমবেত ইউরোপকে পরাভূত করিয়াছিল। যদি তাহা না করিত, তবে ফ্রান্সের বড় তুর্দশা হইত। শিষ্য। কি প্রকার শারীরিক অনুশীলনের দ্বারা এই ধৰ্ম্ম সম্পূর্ণ হইতে পারে ? গুরু। কেবল বলে নহে। চুয়াড়ের সঙ্গে যুদ্ধে কেবল শারীরিক বলই যথেষ্ট, কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীতে শারীরিক বল অপেক্ষা শারীরিক শিক্ষাই বিশেষ প্রয়োজনীয়। এখনকার দিনে প্রথমতঃ শারীরিক বলের ও অস্থি মাংসপেশী প্রভৃতির পরিপুষ্টির জন্য ব্যায়াম চাই। এদেশে, ডন, কুস্তী, মুগুর প্রভৃতি নানা প্রকার ব্যায়াম প্রচলিত ছিল। ইংরেজি সভ্যতা শিখিতে গিয়া আমরা কেন এ সকল ত্যাগ করিলাম, তাহা বুঝিতে পারি না। আমাদের বর্তমান বুদ্ধিবিপর্যায়ের ইহা একটি উদাহরণ। ’ দ্বিতীয়তঃ এবং প্রধানতঃ অস্ত্রশিক্ষা । সকলেরই সৰ্ব্ববিধ অস্ত্রপ্রয়োগে সক্ষম হওয়া উচিত। শিষ্য । কিন্তু এখনকার আইন অনুসারে আমাদের অস্ত্ৰধারণ নিষিদ্ধ।