বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b8 ধৰ্ম্মতত্ত্ব তৰুদ্ধয়ন্তদাত্মনস্তৱিষ্ঠাস্তংপরায়ণ । গচ্ছস্ত্যপুনরাবৃত্তিং জ্ঞাননিখুঁতকল্মষা: । ১৭। ঈশ্বরেই যাহাদের বুদ্ধি, ঈশ্বরেই যাহাদের আত্মা, ঙাহাতে যাহাদের নিষ্ঠ, ও যাহার তৎপরায়ণ, তাহদের পাপ সকল জ্ঞানে নিৰ্দ্ধত হইয়া যায়, তাহারা মোক্ষপ্রাপ্ত হয়। শিষ্য। এখন বুঝিতেছি যে, এই জ্ঞান ও কর্মের সমবায়ে ভক্তি। কৰ্ম্মের জন্য প্রয়োজন—কাৰ্য্যকারিণী ও শারীরিকী বৃত্তিগুলি সকলেই উপযুক্ত ক্ষুৰ্ত্তি ও পরিণতি প্রাপ্ত হইয়া ঈশ্বরমুখী হইবে। জ্ঞানের জন্য চাই—জ্ঞানার্জনীবৃত্তিগুলি ঐরপ ফুৰ্ত্তি ও পরিণতি প্রাপ্ত হইয়া ঈশ্বরমুখী হইবে। আর চিত্তরঞ্জিনীবৃত্তি ? - . . . . গুরু। সেইরূপ হইবে। চিত্তরঞ্জিনীবৃত্তি সকল বুঝাইবার সময়ে বলিব । । শিষ্য। তবে মন্থয়ে সমুদয় বৃত্তি উপযুক্ত ক্ষুৰ্ত্তি ও পরিণতি প্রাপ্ত হইয়া ঈশ্বরমুখী । হইলে, এই গীতোক্ত জ্ঞানকৰ্ম্মস্তাস যোগে পরিণত হয়। এতদুভয়ই ভক্তিবাদ । মনুষ্যত্ব ও অমুশীলন ধৰ্ম্ম যাহা অামাকে শুনাইয়াছেন, তাহ এই গীতোক্ত ধৰ্ম্মের নূতন ব্যাখ্যা মাত্র। গুরু। ক্রমে এ কথা আরও স্পষ্ট বুঝিবে । ষোড়শ অধ্যায়।—ভক্তি। ভগবদগীতা-সন্ন্যাস | গুরু। তার পর, আর একটা কথা শোন । হিন্দুশাস্ত্রানুসারে যৌবনে জ্ঞানার্জন করিতে হয়, মধ্য বয়সে গৃহস্থ হইয়া কৰ্ম্ম করিতে হয়। গীতোক্ত ধৰ্ম্মে ঠিক তাহ বলা হয় নাই ; বরং কৰ্ম্মের দ্বারা জ্ঞান উপার্জন করিবে এমন কথা বলা হইয়াছে । ইহাই সত্য কথা, কেন না অধ্যয়নও কৰ্ম্মের মধ্যে, এবং কেবল অধ্যয়নে জ্ঞান জন্মিতে পারে না । সে যাই হোক, মনুষ্যের এমন এক দিন উপস্থিত হয় যে, কৰ্ম্ম করিবার সময়ও নহে, জ্ঞানোপার্জনের সময়ও নহে । তখন জ্ঞান উপাজ্জিত হইয়াছে, কৰ্ম্মেরও শক্তি বা প্রয়োজন আর নাই। হিন্দুশাস্ত্রে এই অবস্থায় তৃতীয় ও চতুর্থাশ্রম অবলম্বন করিবার বিধি আছে। তাহাকে সচরাচর সন্ন্যাস বলে। সন্ন্যাসের স্থূল মৰ্ম্ম কৰ্ম্মত্যাগ। ইহাও মুক্তির উপায় বলিয়া ভগবৎকর্তৃক স্বীকৃত হইয়াছে। বরং তিনি এমনও বলিয়াছেন যে, যদিও জ্ঞানযোগে আরোহণ করিবার যে ইচ্ছা করে, কৰ্ম্মই তাহার সহায়, কিন্তু যে জ্ঞানযোগে আরোহণ করিয়াছে, কৰ্ম্মত্যাগ তাহার সহায় । -