পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব (প্রথম খন্ড) - গৌরগোবিন্দ রায়.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগতের আবরণ উন্মোচন করিয়া যে ব্ৰহ্ম প্ৰকাশিত, তাঁহারই জন্য তঁাহার মন । ব্যাকুল হইল। “শান্তিং শিবমদ্বৈতং” এই শ্ৰত্যংশ এবং “ধামা স্বেন সদা । নিরস্ত কত কং সত্যং পরং ধীমহি৷” ভাগবতের এই আদিম শ্লোকটি ইহার মনের সাধ পূর্ণ করিল। সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্ৰহ্ম, আনন্দ রূপমমৃতং མ་ 叶枣 শিবমদ্বৈতম, এই তিনটি শ্রুতাংশ ইতার সাধনের বিষয় হইল, এবং ইনি সাধন দ্বারা ব্রহ্মবিস্তু প্ৰত্যক্ষ করিলেন । পূর্বে যে উপাসনার তত্ব তোমায় বলিয়াছি, তাহাতে তিনটি শ্রুতাংশের বিষয় যাহা বলিবার অনেকটা বলিয়াছি, আর সে সব কথার পুনরালোচনা নিম্প্রয়োজন । বৃদ্ধি । সে সব কথাতো শুনিয়াছি। উপাসনার ভাবপক্ষ এই সকল দ্বারা দাড়াইল কি প্রকারে, সে সম্বন্ধে তো কিছু শোনা চাই । যদি তাহাতে পুনরুক্তি ও হয় ক্ষতি নাই, কেন না। এ সকল কথা যখন সাধনার্থীদের জন্য, তখন পুনরুক্তি দোষ পরিভার্ষ্য । বিবেক । সত্য জ্ঞান অনন্ত কেবল এই তিনটি স্বরূপমাত্ৰ যদি সাধনের বিষয় হষ্টত তাহা হইলে সমুদায় উড়াইয়া দিয়া এক অভাবপক্ষই ব্রাহ্মসমাজে দাড়াইতে পারিত, কিন্তু ব্ৰহ্ম আনন্দরূপে সৰ্ব্ব ত্ৰ প্ৰকাশ পান, তঁাহার। আনন্দের প্ৰকাশে সমুদায় জগৎ ও জীব সৌন্দর্য্যে পুর্ণ, এ কথা বলিলে জগৎ ও জীব উড়িয়া গেল না, তাহাদিগেতে ঈ আনন্দ রূপে সৌন্দৰ্য্যরূপে ঈশ্বর সাধকের নিকট নিয়ত প্ৰকাশিত রহিলেন । “সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্ৰহ্ম।” “আনন্দ রূপমমুতং যদ্বিভাতি।” এ দুই শ্রদ্ধতাংশে পরোক্ষভাবে ব্ৰহ্মদর্শন সম্ভাবে । “শান্তিম” এই শব্দটীর অর্থ প্ৰপঞ্চের অতীত । জগৎ ও জীব প্ৰপঞ্চের অন্তর্গত । যিনি মঙ্গলময় তিনি প্ৰপঞ্চের অতীত এ কথা বলতে এই হইল যে, যিনি সকলের মঙ্গল বিধান । করিতেছেন, তিনি জগতে বদ্ধ নহেন, তিনি সাক্ষাৎসস্বন্ধে সকলকে কল্যাণ । বিতরণ করিতেছেন। অথচ তাহাতে কোন বিকার উপস্থিত হয় না, এখন এক প্রকার তখন অন্য প্রকার এরূপ ভাবের ব্যত্যয় কখন তাঁহাতে ঘটে না । তিনি এক দিকে যেমন প্ৰপঞ্চের অতীত, অন্য দিকে তেমনি একই মঙ্গল ভাবান্বিত । ভাগবতের শ্লোকাংশটিতে অপরোক্ষভাবে ব্ৰহ্মদর্শন অতিস্পষ্টবাক্যে নিবন্ধ রহিয়াছে। জ্ঞানের প্রকাশে সমুদায় আবরণ ভেদ করিয়া সত্যস্বরূপ বিরাজমান, এ কথা বলিলে সত্যস্বরূপের আবরক জগৎ ও জীব কিছুই রহিল না। ইহাই ।