পাতা:ধুতুরা ও যুঁই -বিজন আচার্য.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রৌঢ়মানসে স্মৃতির কোঁটোয় সেই অগ্নিশিখার যে-সব ভাবানুষঙ্গ সঞ্চিত আছে তার একটিতে প্রতিদিনের প্রাকৃত জগতেই ধরা দিয়েছে স্বপ্নলোকের মায়া। সেদিনকার কিশোর-কিশোরী-লীলায় কিশোরীটি রান্নাঘরে খুন্তি হাতে নিয়ে/ব্যস্ত ছিল রন্ধনেতে রত। তার পরের ইতিহাস কবিকণ্ঠেই শোনা যাক : মেঘলা দিনের শুভ্র শরৎকাল আকাশ ছিল নরম আলো’ ঢাকা ; তুলোর মত পেজ খণ্ড মেঘ মেলতে ছিল বকের মতো পাখা । চড়াইগুলো কিচির-মিচির রবে করছে খেলা করবীটির টবে ; ভাবতে ছিলাম বৃষ্টি বুঝি হবে,— হালকা পায়ে ত্রস্তে এলে কাছে রেকারীতে কয়টি ভাজা রাখ। , মেঘলা দিনের শুভ্র শরৎকাল আকাশ ছিল নরম আলোয় ঢাকা । প্রসঙ্গত বল প্রয়োজন, এই উদ্ধৃতির মধ্যেই বিজনকুমারের কবিমানসের সঙ্গে সঙ্গে প্তর কবিকৃতির পরিচয়ও পাওয়া যাবে। রসিক পাঠক অবগুই লক্ষ্য করবেন, জিনকুমারের কবিভাষা রবীন্দ্রনাথের শেষবয়সের কবিতার ভাষাতেই পরিশীলিত। এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের বীথিকার নিমন্ত্ৰণ কবিতাটিকে মনে করিয়ে দেবে। কিন্তু এই স্বীকরণ নিন্দার নয়, প্রশংসার । বিজনকুমার যে র্তার নিতৃত কাব্যসাধনায় রবীন্দ্ৰ-ঐতিহকে আত্মসাৎ করতে পেরেছেন, এতেই তার চারুনীলনের অভ্রান্ত পরিচয় খুজে পাওয়া যাবে। কবি জানেন, এই ভালোবাসা কপূরের মতোই একদিন শূন্যে মিলিয়ে যাবে। কিন্তু তার সৌরভে স্মরণের স্বর্ণমঞ্জুষ চিরদিনই আমোদিত থাকবে। অনাগত সেই ভবিতব্যের কথা চিন্তা করেই কবি বলছেন, তখন পড়িবে মনে আজিকার এ সান্ধ্য বাসরে নিন্দাভয় উপেক্ষিয়া জেলেছ-যে প্রেমের প্রদীপ, দেহের অতীত প্রেমে যে বাসর করেছ রচনা, স্মৃতির ভাণ্ডারে রবে অম্লান সে জীবন-অধিপ।