পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
দারোগার দপ্তর, ১৫৮ সংখ্যা।

পণ্ডিতগণ ও দণ্ডী-সন্ন্যাসী প্রভৃতি আপন আপন স্থান অধিকার করিয়া বসিয়া আছেন। সুতরাং আমরা কোনরূপ বাঙ‍্নিষ্পত্তি না করিয়া সভার একপার্শে উপবেশন করিলাম। দেখিতে দেখিতে ৮টা বাজিয়া গেল। সকলে বলাবলি করিতে লাগিল, এইবার রাণী আসিবেন। বাস্তবিক কিছুক্ষণ পরে এক অপরূপ রূপলাবণ্যবতী যুবতী সথিদ্বয় সমভিব্যাহারে সভাস্থলে আসিয়া গললগ্নীকৃতবাসে সভাস্থ দণ্ডী সন্ন্যাসী এবং ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণকে প্রণাম করিলেন। যুবতীকে দেখিলেই রাণী বলিয়াই বোধ হয়। বয়স আন্দাজ ২৪৷২৫, অতিমধুরস্বরে বিনয়াবনত হইয়া সকলের সহিত আলাপ করিতে লাগিলেন। আমার সঙ্গী সন্ন্যাসী একবার রাণীজীর মুখের দিকে তাকাইয়া মুখ হেঁট করিলেন।

 রাণী কমলাও সন্ন্যাসীকে দেখিয়া যেন ভীতচকিত হইলেন, মুখ-জ্যোতি যেন তিরোহিত হইল। মুখে হাসি আছে, অথচ যেন নাই। বেশী কোন কথা আর না কহিয়া ভৃত্যকে ডাকিয়া বলিলেন, “ইহাদের সুব্যবস্থা করিয়া দাও, আমি কিছু পরে আবার আসিব।” এই বলিয়া তিনি সখিদ্বয়কে সঙ্গে করিয়া অন্তঃপুরে প্রবেশ করিলেন। এদিকে জলযোগের ব্যাপার উপস্থিত। একটা সারগোল পড়িয়া গেল। যে যার পাতা লইয়া বসিল। কিন্তু আমাদের সন্ন্যাসী ঠাকুরের বরাত বড়ই মন্দ এই ভিড়ের ভিতর তিনি যে কোথায় চলিয়া গেলেন, তাহা কেহই জানিতে পারিল না, কিন্তু আমি জানিতাম, আমারই উপদেশমত তিনি কোন কার্য্যোদ্ধার মানসে কোন স্থানে গমন করিলেন। তাঁহার অদৃষ্টে রাজভোগ জুটিল না।