পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৫৮ সংখ্যা।

অধিকারী। নিজে তিন শত টাকা মাহিনার চাকুরী করেন, নীলকুঠীর ম্যানেজার, মাসে প্রায় হাজার টাকা রোজগার। তিনি বিহার অঞ্চলে থাকেন। বাটীতে অন্য কোন অভিভাবক না থাকায়, ও কর্ম্মস্থলে স্ত্রীকে রাখিবার তাদৃশ সুবিধা না থাকায় কমলাকে পিত্রালয়েই রাখেন—মাঝে মাঝে আসিয়া কমলাকে দেখিয়া যান, আজও সন্তানাদি হয় নাই। কমলার বয়স হইয়াছে, কমলা পূর্ণ যুবতী—কমলা সুন্দরী, হৃদয় দয়াদাক্ষিণ্যে পূর্ণ—কমলা আদর্শ স্ত্রী। ছয় মাসের পর কমলার স্বামী আজ শ্বশুরালয়ে আসিমাছেন—বহুকালে পর কমল আজ স্বামী-সন্দর্শন করিলেন। কমলার স্বামীর নাম সরোজকান্ত। সরোজকান্তের সমস্ত দিন আহার নাই—কমলা স্বামীকে শীঘ্র শীঘ্র খাওয়াইবার জন্য রন্ধনকার্য্যে ব্যাপৃত; সরোজবাবু উপস্থিত কিঞ্চিৎ জলযোগ করিয়া বৈঠকখানায় তাম্রকূট সেবনে ব্যস্ত। বৃদ্ধ শ্বশুর পার্শ্বের ঘরে,—সে ঘরে আরও দুটী লোক আছে বলিয়া বোধ হইল। কেন না, পরস্পর তাহারা কি বলাবলি করিতেছে। সরোজবাবুর ঔৎসুক্য জন্মাইল—তিনি কপাটের ছিদ্র দিয়া দেখেন—ভীষণাকৃতি দুইজন লোক বৃদ্ধের সহিত পরামর্শ করিতেছে। সরোজবাবু বৃদ্ধ শ্বশুরকে খুব ভালরকম জানিতেন; গোহত্যা, ব্রহ্মহত্যা, ডাকাতি, এ সব কিছুই বাকী নাই,—এ বৃদ্ধ বয়সে এখনও সে পাপপ্রবৃত্তি বৃদ্ধের হৃদয় হইতে অন্তর্হিত হয় নাই,—বৃদ্ধ আজ ডাকাতের সহিত পরামর্শে ব্যস্ত। সরোজ শুনিলেন,—বৃদ্ধ, সাক্ষাৎ যমদূত সদৃশ ঐ দুই জনকে বলিতেছেন,—

 “দুজনকে কুড়ী টাকা দেবে, পারবি ত?

 “কর্তা! আমাদের অসাধ্য কিছু আছে কি?”