পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নকল রাণী।

 “তোরা আছিস্ ব’লে—আমি আজও বেঁচে আছি।”

 “তবে কি জানেন,—জামাই বাবু।”

 “নে—নে—অনেক জামাই বাবু দেখেছি,—টাকার কাছে কেউ নয়।”

 “জামাই বাবু” এই কথা শুনিয়া সরোজকান্ত শিহরিয়া উঠিলেন, মনে মনে ভাবিলেন—“জামাই বাবু!” কোন্ জামাই বাবু? জামাই ত আমি—আমাকে কি এরা হত্যা করিবে— বিশ্বাস নাই। দেখি, আর কি কথাবার্তা হয়।”

 বৃদ্ধ বলিলেন, “তবে তোরা যা, ঠিক সময়ে আসিস্।”

 “আজ্ঞে কর্ত্তা তা আর বলতে হবে না।” এই কথা বলিয়া সেই দুই ব্যক্তি পার্শ্বের দরজা দিয়া চকিতের ন্যায় চলিয়া গেল। বৃদ্ধ একাকী রহিলেন।

 সরোজকুমার চিন্তা-নিমগ্ন, ঘোর সন্দেহ-দোলায় দোদুল্যমান; এরা আমাকেই খুন করিবে বুঝিলাম, আজ মৃত্যু অনিবার্য— নিয়তির হাত কেহই এড়াইতে পারে না, কপালে যা আছে, তাই হইবে, ভগবান ভরসা। কিন্তু শ্বশুর মহাশয় আমাকে খুন করিবেন কেন? আমার বিষয় আশয়, নগদ টাকাকড়ি হস্তগত হইবে বলিয়া?—অর্থের জন্য নরহত্যা, বিশেষতঃ পুত্রে ও জামাতায় কোন প্রভেদ নাই, সেই জামতাকে খুন করিয়া তাহার ধনদৌলত লইবার চেষ্টা! আজ যদি কোনরূপে বাঁচি, তবে এই পর্য্যন্ত— কমলা যে ভাল, তাহাও নয়—সেও এর ভিতর আছে নিশ্চয়ই। আর না-রাক্ষসীর মায়া, আর না। সরোজ প্রতিমুহূর্ত্তে মৃত্যু কল্পনা করিতে লাগিলেন।

 কমলার রান্না হইয়া গিয়াছে—প্রাণ ভরিয়া আর স্বামীকে