পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম পরিচ্ছেদ >>> নবযৌবনের সেই গভীর আবেগ ও উন্মত্ততা, চাঞ্চল্য ও ব্যাকুলত, পরস্পরের মুহ-বিলোকন ও বহু-আলাপন, প্রতিমুহূর্তে নব প্রেমের ভাববৈচিত্র্য লেখনী মুখে পরিস্ফুট করিবার আশা নাই। এই ভাবে তিন মাস কাটিয়া গেল। নওরোজির সময়ে সময়ে সন্দেহ হইত তাহার ন্যায় হতভাগ্যের অদৃষ্ঠে ভগবান এত সুখ স্থায়ী করিবেন না ; হয়ত একমুহূৰ্ত্তে র্তাহার সুখের স্বপ্ন মরিচীকা-ভ্রান্ত পথিকের ভ্রাস্তির ন্যায় দূরে চলিয়া যাইবে । তথাপি ভগবান তাহাকে যে অনাস্বাদিতপূৰ্ব্ব অতুল আনন্দের অধিকারী করিয়াছিলেন, সেজন্য তিনি বিধাতার নিকট অন্তরের সহিত কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেন। অবশেষে সত্যই কঠোর দুঃখের দিন আসিল। একদিন প্রভাতে নওরোজি তুলি ধরিয়া সবেমাত্র একটি হরিৎ লতাবিতান মধ্যবৰ্ত্তী প্রস্ফুটিত কুসুমের চিত্র অঙ্কিত করিয়াছেন, এমন সময় একজন খানসাম৷ আসিয়া তাহাকে সংবাদ দিল, কত্রী র্তাহাকে ডাকিতেছেন, অবিলম্বেই সেখানে যাইতে হইবে।—নওরোজি তুলি ফেলিয়া, "ভারা" হইতে নামিলেন ; তাহার মনে কেমন একটা সন্দেহের ছায়াপাত হইল, তিনি বড় অসচ্ছন্দতা বোধ করিতে লাগিলেন । র্তাহার মনে হইল, এতদিন পরে হয়ত অকস্মাৎ তাহার সুখের কুঞ্জ দাবানলে দগ্ধ হইবে ; তিনি অত্যন্ত ভীত ভাবে ভূত্যের সঙ্গে কত্রীর নিকট চলিলেন ; শেষে তিনি দ্বার প্রান্তে উপস্থিত হইলে ভূত্য নিম্নস্বরে বলিল, "ব্যাপার কি মহাশয় ? কত্রী যে রাগিয়া আগুন হইয়াছেন ! এমন ভয়ঙ্কর রাগ ত তাহার কখনও দেখি নাই। গতিক ভাল বোধ হয় না ; আপনি একটু সাবধানে তাহার সহিত কথাবার্তা বলিবেন ।”