ծ Գe নন্দনে নরক সেই মুখের দিকে চাহিয়া চাহিয়া নওরোজি বলিলেন, “কৰ্ণোলয় আমি যখন তোমার মুখখানি ভাল করিয়া দেখি—তখন আমার অযোগ্যতা ও চিত্রকুশলতার অভাবের কথা স্মরণ করিয়া ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত হই ; নিজের দৈন্ত বুঝিতে পারি। তুমি এখানে আসিবার পূৰ্ব্বে আমি তোমার এই ছবিখানি অনেকবার দেখিয়াছি ; কিন্তু এক বারও মনে হয় নাই যে, ইহাতে কোনও খুত আছে। এখন তুমি আসিয়াছ, এখন বুঝিতেছি কায়ায় ও ছায়ায় কত প্রভেদ । ছবিখানি এত চেষ্টাতেও নিখুত করিতে পারিলাম না!” নওরোজি যাহাই বলুন, তাহার অঙ্কিত কর্ণেলিয়ার এই চিত্ৰখানি সৰ্ব্বাঙ্গ সুন্দর হইয়াছিল। নবীন চিত্রকরের পক্ষে এরূপ চিত্রাঙ্কণ যথেষ্ট গৌরব ও শ্লাঘার কথা ; কিন্তু তথাপি নওরোজির মন উঠিতেছিল না ! কর্ণেলিয়া হাসিয়া বলিল, “তুমি কেন বৃথা ক্ষোভ প্রকাশ করিতেছ? আমার ছবি সত্যই নিখুত হইয়াছে।” নওরোজি বলিলেন, “ছবি কেবল নিখুত করিয়া আঁকিতে পার। তেমন গৌরবের কথা নয় ; ভাল ফটোও নিখুত হইতে পারে, কিন্তু তাহাতে ও তৈলচিত্রে প্রভেদ কি ? আমি তোমার ছবি যথাসাধ্য নিখুত করিয়া আঁকিয়াছি বটে, কিন্তু তোমার চক্ষুর ঐ প্রেমময় চাহনি, তোমার মুখের ঐ প্রতিপ্রফুল্ল ভাব, তোমার সুকোমল গণ্ডের ঐ লজ্জারুণ আভা জীবন্তবৎ আমার চিত্তে প্রতিফলিত হইয়াছে কি ? সেই জন্যই বলিতেছি ছবি ঠিক হয় নাই ; তাই আমার ইচ্ছা হইতেছে, নূতন করিয়া আর একখানি ছবি আঁকি।” কর্ণেলিয়া বলিল, “তাহার জার সুবিধা হইবে না।”
পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২৬
অবয়ব