পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬৮ নন্দনে নরক আমি আনন্দ সাগরে ভাসিতে লাগিলাম, কিন্তু বিশ্বাসঘাতিনী, তুমি আমার মস্তকে বজ্রাঘাত করিলে !” O to আমিনা মুখ তুলিয়া দৃঢ় স্বরে বলিলেন, “মিথ্যা কথা ! এ কথা যে তোমাকে বলিয়াছে, সে ভয়ঙ্কর মিথ্যাবাদী ।” মেটা সাহেব ক্রুরহাস্তে উত্তর দিলেন "মিথ্যা কথা নহে, তোমার বিশ্বাসঘাতকতার প্রমাণ আছে। কোন দিনও তোমার ছলনা বুঝিতে পারিব না, তুমি কি আমাকে এতই নিৰ্ব্বোধ মনে কর ? তুমি মনে করিয়াছিলে, আমার সম্মুখে মায়াদণ্ড উত্তোলিত করিয়৷ আমার দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করিয়াছ, কিন্তু তাহ৷ সত্য নহে । আমি সকলই বুঝিতে পারিতাম ; কিন্তু তাহা তোমাকে বুঝিতে দিতাম না। কারণ আমি তখনও তোমাকে ভাল বাসিতাম ! তোমার প্রতি আমার প্রগাঢ় প্রেমের নিকট আমার সকল সম্মান, সকল অহঙ্কার, এমন কি, আত্মসন্মানও তুচ্ছ বোধ হইত। আমি তোমাকে সে কথা বলি নাই ; তাহার কারণ, আমি জানিতাম যে দিন আমার মুখ হইতে সত্য কথা প্রকাশিত হইয়া পড়িবে, সেই দিন হইতে তোমার সহিত আর আমার কোনও সম্বন্ধ থাকিবে না । তোমাকে আমি জীবনের আলোকরূপিনী মনে করিতাম ; কিন্তু তাহ স্বর্গের প্রেমালোক নহে, তাহ নরকানলের ন্যায় তীব্র । সে আলোকে আমার আঁধার হৃদয় আলোকিত হয় নাই, আমার প্রাণ দিবা নিশি তিল তিল করিয়া দগ্ধ হইয়াছে। তোমাকে অধিক ভাল বাসিতাম, কি অধিক ঘৃণা করিতাম, তাহ আমি কোনও দিন বুঝিতে পারি নাই।” । আমিন স্বামীর মুখের উপর কাতর বৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া বলিলেন, “তোমার এ তিরস্কার আমার অসহ, আমাকে ক্ষমা কর।”