পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

›ዓ● নন্দনে নরক মেট সাহেব মাথা নাড়িয়া বলিলেন, “আর তোমার মিথ্য রচনা শুনিবার আমার ইচ্ছা নাই, তোমার কোন কথায় আমার মন ভুলিবে না ; তুমি বিশ্বাসঘাতিনী ও পাপিষ্ঠা—এ সংস্কার আমার মন হইতে দূর করিতে পারিব না। আমার সম্মুখ হইতে চলিয়া যাও।” আমিনা আর সহ করিতে পারিলেন না ; এই শেষ আঘাতে তিনি তাহার স্বামীর পদপ্রান্তে মূচ্ছিত হইয়া পড়িলেন। মেটা সাহেব তাহার স্বীর এই শোচনীয় অবস্থা দেখিয়াও বিচলিত হইলেন না, ধরা শয্য হইতে র্তাহাকে তুলিবারও চেষ্টা করিলেন না। দাস দাসীগণের কাহাকেও না ডাকিয়া, তিনি সেই কক্ষ ত্যাগ করিয়া বারান্দায় বাহির হইলেন । সেই সময় একজন ভূত্য একখানি পত্র আনিয়া তাহার হাতে দিল ; পত্র খুলিয়া তিনি পাঠ করিলেন । ইহা দস্তুর সাহেবের পত্র । তিনি লিখিয়াছিলেন, বিশেষ কোনও কারণে তিনি কর্ণেলিয়াকে বিবাহ করিতে পারিবেন না, সেইজন্য তিনি তাহদের বিবাহের সম্বন্ধ ভঙ্গ করিলেন । পত্ৰখানি পাঠ করিয়া মেট সাহেবের অধীরতা শতগুণ বৰ্দ্ধিত হইল,তাহার বিশ্বাস হইল শক্রদল তাহার সৰ্ব্বনাশের জন্য কেবল র্তাহার নিকটেই স্তর প্রেরণ করিয়া নিরস্ত হয় নাই, চতুর্দিক হইতে র্তাহাকে আক্রমণের চেষ্টা করিতেছে —তাহার হাত হইতে পত্ৰখানি ধ্ৰুসিয়া পড়িল ; তিনি বারান্দার রেলিংএ মস্তক স্পর্শ্ব করিয়া জড়ের ন্যায় দণ্ডায়মান রহিলেন, তাহার রুদ্ধ নেত্রের সন্মুখে ব্ৰহ্মাণ্ড ঘুরিতে লাগিল । ঠিক সেই সময় কর্ণেলিয়ার দাসী ঝড়ের ন্যায় বেগে মেট সাহেবের সম্মুখে আসিয়া অত্যন্ত ব্যগ্রভাবে বলিল, “সৰ্ব্বনাশ হইল ! আপনার কস্তাকে রক্ষা করুন ।”