পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ 'LOL. তাহার পর হইতেই যেন অমানিশার অনন্ত অন্ধকার রাশি আমাকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখিয়াছে।” আমিনা দৃষ্টি নত করিয়া বলিল, "আমার স্কার ক্ষুদ্র নারীকে এতকথা বলিয়া লজ্জিত করিবেন না । আমি আপনার নিকট কৃতজ্ঞ, ইহার অধিক আমার কিছুই বলিবার নাই ।” বায়রামজি বলিল, “কিন্তু আমার অনেক কথা বলিবার আছে। আমার জীবন অন্ধকারময়,মরুময়, উদেখ হীন ; পৃথিবীতে আমার মুখের দিকে চাহিবার কেহই নাই। জীবনে কত কষ্ট পাইয়াছি, শুনিলে আপনার কোমল হৃদয় করুণায় প্লাবিত হইয়া যাইবে । যখন আপনাকে দেখি নাই, তখন আমার মনে হইত, প্রেম কেবল কল্পনার বিকার মাত্র, ক্ষণিক মোহ মাত্র, কৰ্ম্ম-বৈচিত্র্যপূর্ণ বিপুল বসুন্ধরায় তাহার স্থান নাই ; কিন্তু এখন মনে হইতেছে, প্রেম মানব হৃদয়ের নিয়ন্তী, ইহা অন্ধকারকে আলোকিত করে, পাপিষ্ঠের হৃদয় পুণ্যময় করে। যদি আমি কোন দিন পূৰ্ব্ব-পূণ্যফলে আপনাকে আমার হৃদয়ের অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে বরণ করিতে পারি, তাহা হইলে আমার এই চির দুঃখময়, অশান্তিপূর্ণ, উদেশ্বহীন জীবনও হয়ত সুখী হইতে পারে। কিন্তু মানুষের সকল আশা পূর্ণ হয় না ; বোধ হয়, আমার এই অপরিমিত আকাঙ্ক্ষাও পূর্ণ হইবার নহে, সুতরাং আমি হতাশ হইয়াছি।” অামিন বীণা-বিনিন্দিত স্বরে বলিল, “আপনার কথা শুনিয়া আমি বড় পরিতপ্ত হইলাম ; আমাদের যে বয়স, এ বয়সে নিরাশা আমাদের মনে স্থান পায় না। পৃথিবীতে যখন কিছুই অসম্ভব নহে, তৃখন আপনি কেন হঠাৎ এত হতাশ হইলেন, তাহ বুঝিতে পারিতেছি না।”