পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম পরিচ্ছেদ ৩৭৩ প্রায় আধ ঘণ্টা পরে বৃদ্ধ এজরা সেই কক্ষে প্রবেশ করিয়া পরিচ্ছদ পরিবর্তন করিতে লাগিলেন, হঠাৎ পুত্রের প্রতি তাহার দৃষ্টি পড়িল । এজর সাহেব স্নেহদ্র স্বরে পুত্রকে বলিলেন, “তুমি কোথায় গিয়াছিলে ? আমি তোমাকে খুজিবার জন্য চারিদিকে লোক পাঠাইযাছি । বৎস, আজ সকালে তোমার প্রতি আমি যে অন্যায় ব্যবহার করিয়াছি, সেজন্য আমি বড়ই অমুতপ্ত হইয়াছি।” বায়রামজি কোন উত্তর দিলেন না, পিতার অমুতাপ তাহার হৃদয় পর্শ করিল না । ঈজর সাহেব আবার বলিলেন, “আমি পিত। তুমি পুত্র, তোমার ব্যবহারে বিরক্ত হইয়া ক্রোধের তাড়নায় আমি তোমাকে বেত্ৰাঘাত করিয়াছি, এজন্য আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি, তুমি আমুকে ক্ষমা করিতে পার ; পিতা পুত্রের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিলে পুত্রের সকল ক্রোধ দুর হওয়া উচিত।” এ কথাতেও বায়রামজি কোন উত্তর দিলেন না ; এজরা সাহেব বুঝিলেন, পুত্রের অভিমান সহজে ভঙ্গ হইবে না, তিনি মিষ্ট কথায় তাহাকে হিতোপদেশ প্রদানের ইচ্ছা করিলেন ; কিন্তু দীর্ঘ পথ ভ্রমণে বুদ্ধ পরিশ্বাস্ত হইয়াছিলেন, তিনি এক গ্ল্যাস জল পানের জন্য টেবিলের কাছে গিয়া দাড়াইলেন, এবং ম্যাসে জল ঢালিয়া তাহা হাতে করিয়৷ তুলিলেন । ইহা দেখিয়া বায়রামজির মাথার মধ্যে বন বন করিয়া ঘুরিয়া উঠিল ; তাহার পদতল হইতে যেন পৃথিবী সরিয়৷ সরিয়া যাইতে লাগিল, তাহার নিশ্বাস রোধ হইয়া আসিল ; কিন্তু তখনও বায়রামজি নিৰ্ব্বাকভাবে বসিয়া রহিলেন ।