2) R नदक्षेिबांन বুলাইয়া লইতে, আরও এমনি সব ছোট-খাটাে কাজ শেষ করিতে শৈলেশের সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া গেল। তাহার কৰ্ম্মনিরত একাগ্ৰ মুখের চেহারা বাহির হইতে পর্দার ফাক দিয়া দেখিলে, এই কৰ্ত্তব্যনিষ্ঠা ও একান্ত মনঃসংযোগের প্রতি আনাড়ি লোকের মনের মধ্যে অসাধারণ শ্রদ্ধা জন্মাইবার কথা । অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শ্রদ্ধার হানি করা এই গল্পের পক্ষে প্রয়োজনীয় নয়, এ-ক্ষেত্রে এইটুকু বলিয়া দিলেই চলিবে যে, অধ্যাপক বলিয়াই যে সংসারে ছলনা করার কাজে হঠাৎ কেহ তাহাদিগকে হাঁটাইয়া দিবে। এ আশা দুরাশা । হাতের কাজ সমাপ্ত করিয়া শৈলেশ্বর নিজেই সুইচ, টিপিয়া লইয়া আলো জ্বালাইয়া মস্ত মোটা একটা দর্শনের বই লইয়া পাঠে মনোনিবেশ করিল, যেন তাহার নষ্ট করিবার মুহুর্তের অবসর নাই, অথচ সন্ধ্যার পরে এরূপ কুকৰ্ম্ম করিতে পূর্বে তাহাকে কোনদিন দেখা যাইত না। এইরূপে যখন সে অধ্যয়নে নিমগ্ন, বাহিরে পর্দার আড়াল হইতে কুমুদা ডাকিয়া কহিল, বাবু, মা বলে দিলেন আপনার খাবার দেওয়া হয়েচে, আসুন। শৈলেশ ঘড়ির প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া বলিল, এ ত আমার খাবার সময় নয়। এখনো প্ৰায় পঞ্চাশ মিনিট দেরী । কুমুদা জিজ্ঞাসা করিল, তা হলে তুলে রাখতে বলে দেবো ? শৈলেশ কহিল, তুলে রাখাই উচিত। আবদুল না থাকাতেই এই সময়ের গোলযোগ ঘটেচে । দাসী আর কোন প্রশ্ন না করিয়া চলিয়া যাইতেছিল, শৈলেশ ডাকিয়া বলিল, সমস্ত তোলা-তুলি করাও হাঙ্গামা, আচ্ছা, বল গে আমি যাচিছ। আজ খাবার-ঘরে টেবিল-চেয়ারের বন্দোবস্ত নয়, উপরে আসিয়া দেখিল, তাহার শোবার ঘরের সম্মুখে ঢাকা বারান্দায় আসন পাতিয়া অত্যন্ত স্বদেশী প্রথায় স্বদেশী আহারের ব্যবস্থা হইয়াছে, সাবেক দিনের রেকবি গেলাস বাটি প্রভৃতি মাজা-ধোয়া হইয়া বাহির
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২০
অবয়ব