नवर्थिन Sp হইয়াছে। থালার তিন দিক ঘেরিয়া এইসকল পাত্রে নানাবিধ আহাৰ্য্য থরে থরে সজ্জিত ; অদূবে মেজের উপর বসিয়া উষা, এবং তাহাকে ঘেষিয়া বসিয়াছে সোমেন। শৈলেশ আসনে বসিয়া কহিল, তোমাকে তা সঙ্গে খেতে নেই আমি জানি, কিন্তু সোমেন ? তাকেও খেতে নেই নাকি ? ইহার উত্তর ছেলেই দিল, কহিল, আমি রোজ মার সঙ্গে খাই, বাবা । শৈলেশ আয়োজনের প্রাচুৰ্য্যের প্রতি লক্ষ্য করিয়া বলিল, এত সব রাধলে কে ? তুমি নাকি ? উষা কহিল, হঁ । শৈলেশ কহিল, বামুনটাও নেই বােধ হয় ? যতদূর মনে আছে তার মাইনে বাকি ছিল না-তাকে তা’হলে এক বছরের আগাম দিয়েই বিদেয় করলে ? উষা মুখের হাসি গোপন করিয়া কহিল, দরকার হলে আগাম মাইনেও চাকরীদের দিতে হয়, কেবল বাকী রাখলেই চলে না । কিন্তু সে আছে, তাকে ডেকে দেবো নাকি ? শৈলেশ তাড়াতাড়ি মাথা নাড়িয়া কহিল, না, না, থাক। তাকে দেখবার জন্যে আমি উতলা হয়ে উঠিনি, তাকেও মাঝে মাঝে রাধতে দিও, নইলে যা-কিছু শিখেছিল ভুলে গেলে বেচারার ক্ষতি छgद । আহার করিতে বসিয়া শৈলেশের কত যে ভুল লাগিল, তাহা সে-ই জানে। মা যখন বঁাচিয়া ছিলেন, হঠাৎ সেইদিনের কথা তাহার মনে পাডল। পাশের বাটিটা টানিয়া লইয়া কহিল, দিব্যি গন্ধ বেরিয়েচে । গোসাইরা মাংস খায় না, তারা কঁাটালের তারকারীতে গরম মসলা দিয়ে গাছ-পাট বলে খায়। আমার রুচিটা ঠিক অতখানি উচ্চ-জাতীয় নয়। তাই কঁটািল বরঞ্চ আমার সইবে, কিন্তু গাছ পাটা সইবে না ।
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২১
অবয়ব