互梨 একটা সপ্তাহ যে কোথা দিয়া কেমন করিয়া কাটিয়া আবার রবিবার ফিরিয়া আসিল, শৈলেশ ঠাহর পাইল না। সকালে উঠিয়াই উষা কহিল, তোমাকে রোজ বলেচি, কথা শুনচ না-যাও আজ ঠাকুরবির ওখানে। সে কি মনে করচে বল ত ? তুমি কি আমার সঙ্গে তার সত্যি-সত্যিই ঝগড়া করিয়ে দেবে নাকি ? শৈলেশ মনে মনে অতিশয় লজ্জা পাইয়া বলিল, কলেজের যে রকম কাজ পড়েচে উষা বলিল, তা আমি জানি। কলেজ থেকে ফেরবার মুখেও তাই একবার গিয়ে উঠতে পারলে না ? ? 够 কিন্তু কি-রকম শ্ৰান্ত হয়ে ফিরতে হয়, সে তা জানো না ? তোমাকে ত আর ছেলে পড়াতে হয় না। উষা হাসিয়া ফেলিল, কহিল, তোমার পায়ে পড়ি, আজি একবার যাও । রবিবারেও ছেলে-পড়ানোর ছল করলে বিভা জন্মে আর আমার মুখ দেখবে না । এই বলিয়া সে সহিসকে ডাকাইয়া আনিয়া গাড়ী তৈরী করিবার হুকুম দিয়া কহিল, বাবুকে শ্যামবাজারে পৌঁছে দিয়েই তোরা ফিরে আসিস । গাড়ীতে আমার কাজ আছে । যাইবার সময় শৈলেশ ছেলেকে সঙ্গে লইবার প্রস্তাব করিলে, সে বিমাতার গায়ে ঠেস দিয়া মুখখানা বিকৃত করিয়া দাড়াইয়া, রহিল। পিসীমার কাছে। যাইতে সে কোনদিনই উৎসাহ বোধ করিত না । বিশেষতঃ সেদিনের কথা স্মরণ করিয়া তাহার ভয়ের অবধি রহিল না। উষা ক্ৰোড়ের কাছে তাহাকে টানিয়া লইয়া সহস্তে বলিল, সোমেন থাক, ও না হয়। আর একদিন যাবে।
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪
অবয়ব