নববিধান Rදී”. আশায় ছেলেমানুষের গায়ে চন্দনের ছাপ মেরে দিয়েচে । এতে খুনো খুনি কাণ্ড করবার কি আছে। বিভা তেমনি ক্রোধের স্বরে প্রশ্ন করিল, এর পরিণাম ভেবে দেখেচ ? ক্ষেত্রমোহন বলিলেন, বিকালবেলা মুখ-হাত ধোয়ার সময় আপনি মুছে যায়-এই পরিণাম। বিভা কহিল, ও:- এইমাত্র ! তোমার ছেলে-পুলে থাকলে তুমিও তা হলে এইরকম করতে দিতে । • ক্ষেত্রমোহন কহিলেন, আমার ছেলে-পুলে যখন নেই, তখন এ তর্ক বৃথা । বিভা মনে মনে আহত হইয়া কহিল, তর্ক বৃথা হতে পারে, চন্দনও ধুয়ে ফেললে উঠে যায় আমি জানি, কিন্তু এর দাগ হয়ত অত সহজে নাও উঠতে পারে। ছেলে-পুলের ভবিষ্যৎ-জীবনের পানে চেয়েই কাজটা করতে হয় । আজকের কাজ যে অত্যন্ত অন্যায়, এ-কথা আমি একশ’বার বলব, তা তোমরা যাই কেন না বল। ক্ষেত্ৰমোহন কহিলেন, তোমরা নিও-একা আমি ৷ শৈলেশ ত চড় মেরে আর গলাধাক্কা দিয়ে প্ৰায়শ্চিত্ত করলেন-আমি কিন্তু এ আশা করিনে যে, অধ্যাপক-বংশের মেয়ে এসে একদিনেই মেমসাহেব হয়ে উঠবে। তা সে যাই হোক, তোমরা দু-ভাই-বোন এর ফলাফল বিচাব করতে থাকে, আমি উঠলুম। শৈলেশ চুপ করিয়াই ছিল, তাহার মুখের প্রতি চাহিয়া কহিল, কোথায় হে ? ক্ষেত্ৰ কহিলেন, উপরে। ঠাকরুণের সঙ্গে পরিচয়টা একবার সেরে আসি। কথা ক’ন কি-না একটু সাধ্য-সাধনা করে দেখি গে। -এই বলিয়া ক্ষেত্ৰমোহন আর বাক্যব্যয় না করিয়া বাহিয়ে গেলেন। উপরে উঠিয়া শোবার ঘরের দরজা হইতে ডাক দিয়া কহিলেন বোেঠাকরুণ, নমস্কার ।
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩১
অবয়ব