নববিধান 蟹心 ক্ষেত্রমোহন খোচা খাইয়া বলিলেন, ভাইকে ডেকে বাপের বাড়ী চলে গেলেই বোধ হয় করতে পারি। বিভার মন আজ প্ৰসন্ন ছিল ; সে রাগ করিল না, কহিল, ওকাজটা আমি বোধ হয় পেরে উঠব না । কারণ হিন্দুয়ানীর জপ-তপ এবং ছুই-ছুই বিচার করার বিদ্যেটা ছেলেবেলা থেকেই শিখে ওঠবার সুবিধে পাইনি। স্ত্রীর কথায় ক্ষেত্রমোহন আজকাল প্রায়ই অসহিষ্ণু হইয়া পড়িতেন, কিন্তু ক্ৰোধ সম্বরণ করিয়া সহজ-কণ্ঠে বলিলেন, তোমার অতি-বড় দুৰ্ভাগ্য যে ও-সুযোগ তুমি পাওনি। পেলে হয়ত এতবড় বিড়ম্বনা তোমার দাদার অদৃষ্ট আজ ঘটত না -এই বলিয়া তিনি ঘর ছাডিয়া বাহির হইয়া গেলেন । c5tf ভবানীপুরে সেই সুশিক্ষিতা পাত্রীটিকে পাত্ৰস্থ করিবার চেষ্টা পুনরায় আরম্ভ হইল, শুধু বিভা এবার স্বামীর আন্তরিক বিরাগের ভয়ে তাহাতে প্ৰকাশ্যে যোগ দিতে পারিল না, কিন্তু প্ৰচ্ছন্ন সহায়ভূতি নানা প্রকারে দেখাইতে বিরত রহিল না। কন্যাপক্ষ হইতে অনুরুদ্ধ হইয়া ক্ষেত্ৰমোহন একদিন সোজাসুজি প্রশ্ন করিলে, শৈলেশ অস্বীকার করিয়া সহজভাবেই কহিল, জীবনের অধিকাংশই ত গত হয়ে গেল ক্ষেত্র, বাকি ক’টা দিনের জন্যে আর নতুন ঝঞ্চাট মাথায় নিতে ভরসা হয় না । সোমেন আছে, বরঞ্চ আশীৰ্বাদ কর তোমরা, সে বেঁচে থাক, এ সবে আমার আর কাজে নেই। মানুষের অকপট কথাটা বুঝা যায়, ক্ষেত্রমোহন মনে মনে আজ বেদন বোধ করিলেন । ইহার পর হইতে তিনি আদালতের ফেরত
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬১
অবয়ব