R নববিধান উমা প্রশ্ন করিয়া মুখপানে চাহিয়াই ছিল-জবাব না পাইয়া আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিল, হঁ দাদা, বললে না ? কি রে ? উমা কহিল, বেশ, আমি বলছিলুম বৌদি হয়ত এই মাসেই ফিরে আসতে পারেন । তোমার মনে হয় না। দাদা ? ভগিনীর প্রশ্নটাকে এড়াইয়া গিয়া ক্ষেত্ৰমোহন কহিলেন, যদি ধরাই যায় তিনি আসবেন না, বহুকাল তঁর না এসেই কাটছিল, বাকিটাও না এসে কাটতে পারে, কিন্তু তাই বলে কি অন্য উপায় নেই ? আমি সেই কথাই বলচি । উমা ঠিক বুঝিল না, সে নিরুত্তরে চাহিয়া রহিল। শৈলেশ তাহার বিস্মিত মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া কহিল, র্তার ফিরে-আসা আমি সঙ্গত মনে করিনে, উমা । তিনি আমার বিবাহিতা স্ত্রী, কিন্তু সহধৰ্ম্মিণী তঁাকে আমি বলতে পারিনে । উষার বিরুদ্ধে এই অভদ্র ইঙ্গিতে ক্ষেত্ৰমোহন মনে মনে বিরক্ত হইলেন ; কহিলেন, ধৰ্ম্মই নেই আমাদের, তা আবার সহধৰ্ম্মিণী । ও-সব উচ্চাঙ্গের আলোচনায় কাজ নেই ভাই, আমি সংসার চালাবার মত একটা ব্যবস্থার প্রস্তাব করচি । শৈলেশ গভীর বিস্ময়ে কহিল, ধৰ্ম্ম নেই আমাদের ? ক্ষেত্রমোহন বলিলেন, কোনখানে আছে দেখাও ? বোজগার করি, খাই-দাই থাকি, ব্যস। আমাদের সহধৰ্ম্মিণী না হ’লেও চলে। তখনকার লোকের ছিল শ্ৰাদ্ধ-শাস্তি-পূজা-পাঠ, ব্ৰত-নিয়ম, ধৰ্ম্ম নিয়েই তারা মেতে থাকত, তাদের ছিল সহধৰ্ম্মিণীর প্রয়োজন । আমাদের অন্ত বায়নাক্কা কিসের ? শৈলেশ মৰ্ম্মাহত হইয়া কহিল, সহধৰ্ম্মিণী তাই ? শ্ৰাদ্ধ-শাস্তি পূজো-পাঠ কথা তাহার শেষ হইল না, ক্ষেত্ৰমোহন বলিয়া উঠিলেন, তাই ভাই তাই, তা ছাড়া আর কিছু নয়। তুমিও হিন্দু, আমিও হিন্দু
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৪
অবয়ব