मदविक्षांभ তাহাদের এই বলিয়া ভরসা দিতেন যে, পশ্চিম হইতে ঘুরিয়া আসার যা বিলম্ব। বৌঠাকরুণকে তিনি এখনও প্ৰায় তেমনি স্নেহ করেন, তেমনি শ্রদ্ধাই প্ৰায় এখনো তাহার প্রতি আছে, কিন্তু ফিরিয়া আসিয়া আর কাজ নাই। যেখানে থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন, ধৰ্ম্ম-জীবনের তঁাহার উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটুক, কিন্তু শৈলেশের গৃহস্থালীর মধ্যে আর নয়। নিজের একটা ভুল এখন প্ৰায়ই মনে হয়, স্বামীকে উষা ভালবাসিতে পারে নাই, পারাও কখনো সম্ভব নয় । ছেলেবেলা হইতে কড়া-বকমের আচার-বিচারের ভিতর দিয়া ধাতটা তাহার কড়া হইয়াই গেছে, সুতবাং ইহকালের চেয়ে পরকালই তাহার বেশি আপনার । স্বামীকে ত্যাগ করিয়া যাওয়াও তাই এত সহজ হইয়াছে। তঁহার নিজের মধ্যে যে স্বামী ছিল, উষার এই আচরণে সে যেমন ভীত, তেমনি ব্যথিত হইয়াছিল । তাহার মনে হইত, সোমেনকে যে সে এত সত্বর ভালবাসিয়াছিল, সেও কেবল সম্ভবপর হইয়াছিল তাহার কড়া কৰ্ত্তব্যের দিক দিয়া । সত্যকার স্নেহ নয় বলিয়াই যাবার দিনটিতে কোথাও কোন টান লাগে নাই । এমনিভাবেই যখন কলিকাতায় ইহাদের দিন কাটিতেছিল, তখন মাস-দুই পরে সহসা এলাহাবাদ হইতে খবর আসিল যে, সোমেনের এই কচি বয়সেই শৈলেশ তাহার পৈতা দিয়াছে, এবং নিজে এক ভক্ত বৈষ্ণবের কাছে দীক্ষা গ্ৰহণ করিয়াছে । গঙ্গাস্নান একটা দিনের জন্যও পিতা-পুত্রের বাদ যাইবার যো নাই এবং মাছ-মাংস যে-পাড়ায় আসে সে-পথ-দিয়া শৈলেশ হঁটে না । শুনিয়া উমা চুপি চুপি হাসিতে.লাগিল। বিভা কহিল, তামাসাটি কে করলেন ? যোগেশবাবু? ক্ষেত্রমোহন কহিলেন, খবর যোগেশবাবুর কাছ থেকেই এসেচে সত্যি, কিন্তু তামাসা করবার মত ঘনিষ্ঠতা ত ভঁর সঙ্গে নেই। বিভা কহিল, দাদার বন্ধু ত, দোষ কি ? একটু থামিয়া বলিল, কেন, জানো ? বৌদিদির সমস্ত ব্যাপার দাদার কাছেই শুনচেন 可-侍一●
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭০
অবয়ব