नयदेिशांन ዓS শৈলেশ লজ্জিতভাবে কহিল, বাইরের ঘরটা নোঙর হয়ে আছে, পরিষ্কার করে নিতে হবে । ক্ষেত্রমোহন বলিলেন, তা হ’লে এখনকাব মত আমরা বিদায় হই । সোমেনকে লক্ষ্য করিয়া কহিলেন, এখন চললুম। আমাদের বোধ করি আর বড় একটা প্রয়োজন হবে না, তবু বলে যাই, বসবাব জায়গা। যদি কখনো একটা হয় তা খবর দিস বাবা।-চল। শৈলেশ চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিল। গাড়ীতে বিভা কাহারও সহিত একটা কথাও কহিল না ; তাহার দু'চক্ষু বাহিয়া হু হু করিয়া শুধু জল পড়িতে লাগিল। একটা কথা তাহারা নিঃসংশয়ে বুঝিয়া আসিলেন, ও-বাড়ীতে র্তাহীদের আব স্থান নাই । দাদা যাই কেন-না ককন, সোমেনকে সে জোর কবিয়া কাড়িয়া আনিবে বলিয়া বিভা স্বামীব কাছে প্ৰতিজ্ঞা করিয়াছিল। মেহের সেই দাম্ভিক উক্তি স্বামী-স্ত্রীর উভয়েরই বার বার মনে পড়িল, কিন্তু নিদারুণ লজ্জায় ইহাব আভাস পৰ্যন্তও কেহ উচ্চারণ করিতে পারিল না । ইহার পরে মাসাধিক কাল গত হইয়াছে। ইতিমধ্যে কথাটা আত্মীয় ও পরিচিত বন্ধুসমাজে এমন আবর্তের সৃষ্টি করিয়াছে যে, লোকে সত্যের মধ্যেও আর যেন আবদ্ধ থাকিতে চাহে না । মুখে মুখে অতিরঞ্জিত ও পল্লবিত হইয়া সমস্ত জিনিষটা এমন কুৎসিত আকার ধারণ করিয়াছে যে, কোথাও যাওয়া-আসাও বিভার পক্ষে অসম্ভব হইয়া উঠিয়াছে, অথচ কোনদিকে কোন রাস্তাই কাহারও চোখে পড়িতেছে না। ক্ষেত্ৰমোহন জানিতেন, সংসারে অনেক উত্তেজনাই কালক্রমে মান হইয়া আসে, ধৈৰ্য্য ধরিয়া স্থির হইয়া থাকাই তাহার উপায়, শুধু এই পরকালে লোভের ব্যবসাটাই একবার সুরু হইয়া গেলে আর সহজে থামিতে চাহে না । অনিশ্চিতের পথে এই অত্যন্ত সুনিশ্চিতের আশাই মানুষকে পাগল করিয়া যেন নিরন্তর ঠেলা দিয়া চালাইতে থাকে। ইহার উপরেও প্রচণ্ড বিভীষিকা উষা। বন্ধু” ও
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৭
অবয়ব