পাতা:নবীনচন্দ্রের গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭৫৮ নবীনচন্দ্রের গ্রন্থাবলী। ধীরে ধীরে পদচারণ করিতেছিলেন, এবং থাকি থাকিয় গবাক্ষপথে চাহিয়, পত্নীর সঙ্গে কি গুরুতর পরামর্শ করিতেছিলেন। উহার কেহই যে প্রকৃতির যেই ভীষণ ভাব অবলোকন কি লক্ষ্য করিতেছিলেন, তাহ বোধ হইল না। বজরা যে তরঙ্গঘাতে টলিতেছিল, সেই টলন যে র্তাহারা অনুভব করিতেছিলেন, কি সেই তরঙ্গাঘাত ষে তাহদের কর্ণে প্রবেশ করিতেছিল, এমন বোধ হইতেছিল না। শিশু অমিয়ও যেন তাহার কিছু বুঝিতেছে না । সে কেবল তাঁহার জননীর চিবুক ধরিয়া একবার তাহাকে বলিতেছিল, “ই মা ! উহাদিগকে আমাদের সঙ্গে লইয়া চল ।” অস্তমনস্ক জননীর কাছে কোনও উত্তর না পাইয়া আবার কাতরভাবে তাহার পিতাকে বলিতেছিল, "হুঁ বাবা । তুমি উহাদের সঙ্গে লইয়া চল, উহাদেব বড় ছ:থ। কিন্তু কেমন করিয়া লইয়া যাইবেন ? অজ্ঞাতকুলশীল একটি বালিকাকে লইয়া গিয়া কি করিবেন ? সে কি উপস্থিত জীবন ছাড়িয়া অন্ত জীবন গ্রহণ করিবে ? তাহারা কি তাহাকে স্বর্থী করিতে পারিকেন ? বালিকাটিই বা কে ? তাহারাও এই বিষয়েরই পরামর্শ করিতেছিলেন । প্রকৃতির বক্ষের মত র্তাহীদের হৃদয়ও কি এক অজ্ঞাত উচ্ছ্বাসে উচ্ছ্বসি হুইতেছিল। সেই রুদ্ধ উচ্ছ্বাস যেন অশ্রুতে এবং আবেগতরঙ্গময়ী ভাষায় প্রকাশিত হইতে ன் পাইতেছিল। শেষে একটি পরামর্শ স্থির করিয়া সেই বেদে ও তাহার প্রেমময়ী ভাৰ্য্যাকে ডাকাইলেন । তখন দর্শকগণ চলিয়া গিয়াছে। সমুদ্রতীরে জনমানবের চিহ্ন মাত্র নাই। বেদে প্রৌঢ়, দেখিতে যেন ভালমানুষ ; আর বেদেনী তাহার ঠিক বিপরীত। তাছার গোবরের বর্ণ, স্থল অঙ্গ, চক্ষু কোটরস্থ, নাসিক বিপুল, কিন্তু অগ্রভাগের উপর দিয়া যেন কি একটা বিপ্লব চলিয়া গিয়াছে। মুখের এমনি এক বিকট ভঙ্গী যে,