পাতা:নবীনচন্দ্রের গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভানুমতী । ૧૯૧ ষে, চক্ষু মেলিবার সাধ্য ছিল না। চক্ষে যেন কঙ্কর প্রবিষ্ট ! হইতেছে, ঝড়ের বেগে নিশ্বাস বন্ধ হইয়! আসিড়েছে। তাহার কেবল গর্জনমাত্র লক্ষ্য কবিয়া এবং উহা পশ্চাতে রাখিয়া, অগ্রসর হইতে লাগিলেন । র্তাহার কাছারি-বাট সমুদ্রের তীরে বলিলেও চলে। তথাপি ঝড়ের বেগে ঘুরিয়া ফিরিয়া, পড়িয়া, উঠিয়া, প্রায় এক ঘণ্টাকাল পরে, তিনি মৃতবং পরীপুত্ৰ সহ কাছারিতে উপস্থিত হইলেন । সেখানে যাইয়া যাহা দেখিলেন, তাহাতে প্রাণ অারও শুকাইয়া গেল। কাছারির গৃহ সকল নরনারী ও শিশুতে, কোলাহল ও ক্ৰন্দনধ্বনিতে, এরূপ পরিপূর্ণ যে, সেখানে দাড়াইবার স্থান নাই, কথা কহিবার সাধ্য নাই। তিনি বুঝিলেন যে, প্রজাদের ঘর বাড়ী সকলই পড়িয়া গিয়াছে। তাহারাও তাহার মত অৰ্দ্ধমৃত অবস্থায় কাছাfরতে আশ্রয় লইয়ছে। অনাথনাথকে দেখিয়া তাহাবু সকলেই প্রথমে উচ্চৈঃস্বরে কাদিয়া হাহাকার করিয়া উঠিল। সকলে বলিতে লাগিল,-“বাবা ! বাড়ীঘর পড়িয়া গিয়াছে। আমাদের কি উপায় হইবে ?” কেহ বলিয়েছিল,—“ওরে বাড়ী ঘর যাক, এখন জান থাকিলে হয় " কেহ—“আমার ছেলে কোথায় গেল,” কেহ বা—“মেয়ে কোথায় গেল”—কেহ বা “আমার বুড়া মা-বাপ কোথায় গেল”—বলিয়া হাহাকার করিয়া কাছারি হইতে তাহদের অন্বেষণে উন্মস্তুৈর মত ছুটয় যাইতেছে। অনাথনাথের কাছারি ও ছোট ছোট ঘর সকল পড়িয়া গিয়াছে, কেবল কয়েকৃথানি বড় ঘর আছে, কিন্তু ঝড়ের প্রত্যেক আঘাতে সশব্দে এরূপ কম্পিত হইতেছে যে, তাহাও ষে বহুক্ষণ থাকিবে, এমন বোধ হইল না । , অনাথনাথ পত্নীপুত্রসহ আর্দ্র বসনাদি ত্যাগ করিয়া কাছারিস্থ ভূ ত্যদিশের পরিধেয় বস্ত্র পরিধান করিয়া একখানি তক্তপোষের উপর বসলেন। প্রজাদিগের এই চুরবস্থা