পাতা:নবীনচন্দ্রের গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভানুমতী। אףכיd ছেলে, কত সুন্দুর সুন্দর মেয়ে, কেমন ফুলের পোষাক পরিয়া মার চারিদিকে গায়িতেছে, নচিতেছে! আর মার মাথার উপর বাবা! আমাদের বাড়ীর বুসের সেই কৃষ্ণ বসিয়া কি সুন্দর . বঁাশী কাজাইতেছেন । মা তাহার পায়ের উপর মাথা রাখিয়া ঐ দেখ কেমন আমার দিকে চাহিয়া আছেন ; মা ! মা ! শিশু এই আনন্দের উচ্ছ্বাসে নয়ন মূদ্রিত করিয়া অন্ধমুৰ্ছিত অবস্থায় রহিল। 'অনািথনাথের ও বালিকার মুখ গম্ভীর—বড় গম্ভীর হইল । অনাথনাথ শিশুর গায়ে হাত দিয়া দেখিলেন, খুব জর ডাকিলেন,--“বাবা ! বাবা • শিশু “বাবা।” বলিয়া অতি ক্ষীণ মৃদু-কণ্ঠে উত্তর দিল, এবং বলি ল,-“উঃ! বুকে বড় ব্যথা ।” অনাথনাথ বুঝিলেন যে ঝটিকা-প্লাবন সময়ে শিশু বুকে দারুণ আঘাত পাষ্টয়াছে। বালক একটি দীর্ঘনিশ্বাস । ত্যাগ করিয়! আবার নয়ন মেলিয়া বলিল,-"দিদি ! আমার মা আমাকে প্রহ্লাদ সাজাইয়া একটি গান গায়িতেন ও আমাকে গায়িতে শিখাইতেন । তুই সেই গানটি জানিস্ ? তুই একবার সেই গানটি গায়িবি ? অামি উঠিতে পারিতেছি না, তেমন করিয়া নাচিতে পাবিব না । আমিও তোর সঙ্গে গাইব ।” বালিকা তাহার সেই অমৃতময় কণ্ঠে সান্ধ্য সৈকতবেলা অমৃতাকীর্ণ করিয়া সেই গানটি গায়িতে লাগিল, এবং অমিয় ও তাহার অমিয়পুরিভ কণ্ঠে সেই সঙ্গে গায়িতে লাগিল ;– - “তোর নাম রেখেছি হরিবোলা । মনের সাধে ও আমার মন খেল না হরিনামের খেলা ৷” অনাথনাথ এ গীত অনেকবার শুনিয়াছেন । মাতা-পুত্রের এ গীতাভিনয় অনেকবার দেখিয়াছেন। কিন্তু গীতটি এমন মধুর, এমন পৰিত্র, এমন প্রশস্ত্রকারী তাহার আর কখনও বোধ হয় নাই। তিনি আত্মহারা হইয়া এই গীত শুনিতে লাগিলেন।