পাতা:নবীনচন্দ্রের গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- ১৮৫e নবীনচন্দ্রের গ্রন্থাবলা। কাগজপত্র গোছাইয়া লইতেছেন ; কি যেন তাহার একটা অভিসন্ধি আছে। তাহার পর অপরাহ্লে ভানুমতীর মুখে রামায়ণ, মহাভারত, ভাগবত প্রভৃতি নানা গ্রন্থ গুনিতেন, এবং তাহার সঙ্গে নানা বিষয়ের আলোচনা করিতেন। কখন বা দ্বারস্থ গণ্ডিত কোনও শাস্ত্রগ্রন্থ পাঠ করিয়া উভয়কে শুনাইতেন। সন্ধ্যার সময়ে আবার উপ্তানে, নদীতীরে, কিংবা পৰ্ব্বতে পৰ্ব্বতে ভানুমতীকে লইয়া বেড়াইতেন, এবং কথন বা কোনবৃক্ষতলায় কি গিরিশেপরে উপলখওে কি উদ্যানবাটাতে বসিয়া, ভানুমতীর মুখে বেহাল, হারমোনিয়ম, এস্রার, সারঙ্গীর সঙ্গে কীৰ্ত্তন শুনিতেন। ভানুমতী বৈরাগীর মেয়ে সে পূৰ্ব্বে বেহালা, সারঙ্গী বাজাইতে জনিত । ইতিমধ্যে সে অবলীলাক্রমে অন্য দুই যন্ত্রও বাজাইতে শিখিয়াছিল। এই সঙ্কীর্তনের সময়ে কখন সে নিজে বাজাইয়া গাইত ; অনাথনাথ তাহার সঙ্গে গাইতেন । অধিকাংশ সময়ে তিনি বাজাইভেন, এবং আত্মহারা হইয় তাহার গান শুনিতেন । এইরূপে সন্ধ্যা অতিবাহিত হইত। আজ বৈশাখী পূর্ণিমা, বড় পুণ্য দিন ; ইহা ত্রযুদ্ধদেবের জন্ম ও তিরোধানের দিন। অনাথনাথ দিবস ও নিশাৰ্দ্ধ আনন্ধে মহামুনির মন্দিরে ও উপবনে কাটাইয়াছেন। রাত্রি যখন শেষ হইয়া আলিতেছে, এমন সময়ে স্বযুপ্ত অবস্থায় তাহার বোধ হইল, যেন কে অতি মধুর ভক্তিবিহ্বল কণ্ঠে মধুর কীৰ্ত্তন গাইতেছে—তিনি যেন শুনিতে পাইলেন,— “গ্রাম পরশমণি, কি দিব তুলনা ! সে অঙ্গপরশে আমার এ অঙ্গ পোন । হকের ভূষণ আমার চরণসেবন ; কর্ণের ভুল আমার নাম শ্রবণ।