পাতা:নবীনচন্দ্রের গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাশির যুদ্ধ। & 8 কাব্যে তাহা প্রাপ্ত হওয়া যায় না। ইহাতে দেবতা নাই, গন্ধৰ্ব্ব নাই দেবামুরের যুদ্ধ নাই, তপোবন প্রভৃতির বর্ণনা নাই, জটাচারধার তাপসদিগের কঠোর তপস্তার কথা অথবা শৈবাল-সমাবৃত পদ্মিনীর ন্যায় বন্ধলাবুত তপস্বিকস্তাদিগের প্রেম, বিরহ ও অত্র বর্ষণ প্রভৃতি ভারতপ্রিয় হৃদয়হুরি বৃত্তান্তনিচয়েরও উল্লেখ নাই কিন্তু তথচ ইহাতে যাহা আছে, তাহ পাঠ করিবার সম অনিৰ্ব্বচনীয় আনন্দে উছলিয়া উঠে এবং কল্পনা অনস্ত সমুদ্রে ভাসমান হয় । - পলাশির যুদ্ধ বলিলে বালকের মার্শমান সাহেবের ইতিহাসপুস্তক স্মরণ করে, এবং বুদ্ধের বিলাতের কোন প্রসঙ্গ মনে করিয়া বীতস্পৃহ হন । কিন্তু যাহাদিগের চক্ষু দৃষ্টিশক্তি লাভ করিয়াছে, এবং বুদ্ধি চিস্ত সহযোগে আমাদিগের কবির কল্পনার সঙ্গে উড়ীন হইতে পালিবে, তাহাদিগের নিকট বঙ্গীয় কবির বীণার জন্ত ইহ অপেক্ষ উচ্চতর বিষয় সম্ভবে না। পলাশির যুদ্ধ বৰ্ত্তমান ভারতইতিবৃত্তের প্রথম পৃষ্ঠা ; পলাশির যুদ্ধ ভারতের নিয়তি-নেমির শেষ আবৰ্ত্ত। ভাগীরথী ও কালিন্দীর স্তায় দুইটী পুরাণ-প্রসিদ্ধ স্রোতস্বতী দুই দিক হইতে প্রবাহিত হইয় যেখানে আসিয়া প্রণয় ভঞ্জে পরম্পরকে আলিঙ্গন করে, অনেকে ভক্তিরসাষ্ট্ৰচিত্তে সেই স্থানকে তীর্থস্থান বলিয়া পূজা করেন। আবার সমুদ্রের পর্বোচ্ছ্বাসপ্রবাহ সকল যে স্থলে আসিয়া ভৈরবরবে পরস্পরপ্রহৃত হয়, এবং ভয়াবহ তরঙ্গমালা স্বজন করিয়া তটভূমি প্রকম্পিত করে, অনেকে প্রকৃতির মহিমায় মুগ্ধ হইয়া তাদৃশ স্থানকে বৈজ্ঞানিকের দৃষ্ঠস্থান বলিয়া আদর করেন। এই গণনায়, পলাশির ক্ষেত্র মহাতীর্ঘ ও মহাপ্ত। এখানে পূর্ব ও পশ্চিম পরস্পর সম্মিলিত হয় ; এখানে প্রাচীন সভ্যতা ও আধুনিক উন্নতি এই দুই প্রতিকূলস্রোত পরস্পর পরম্পরকে আঘাত ও প্রতিঘাত করে ; এখানে বংশপরম্পরায়