পাতা:নবীন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবীন

জীবন থেকে মরণ, মরণ থেকে জীবনে, অন্তর থেকে বাহিরে আবার বাহির থেকে অন্তরে। এই দোলার তালে না মিলিয়ে চললেই রসভঙ্গ হয়। ও পাড়ার ওরা-যে দরজায় আগল এঁটে বসেই রইলো—হিসেবের খাতার উপর ঝুঁকে প’ড়েচে। একবার ওদের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে দোলের ডাক দাও।

ওরে গৃহবাসী, তোরা খোল্ দ্বার খোলস
 লাগলো-যে দোল।
স্থলে জলে বন-তলে
 লাগলো-যে দোল।
  খোল্ দ্বার খোলি।
রাঙা হাসি রাশি রাশি অশোকে পলাশে,
রাঙা নেশা মেঘে মেশা প্রভাত আকাশে,
 নবীন পাতায় লাগে রাঙা হিল্লোল।
  খোল্ দ্বার খোল্॥
বেণুবন মর্ম্মরে দখিন বাতাসে,
প্রজাপতি দোলে ঘাসে ঘাসে—
 মউমাছি ফিরে যা’চি ফুলের দখিণা,
 পাখায় বাজায় তা’র ভিখারীর বীণা,
  মাধবী-বিতানে বায়ু গন্ধে বিভোল।
   খোল্ দ্বার খোল্॥

কিন্তু পূর্ণিমার চাঁদ-যে ধ্যানস্তিমিত লোচন পুরোহিতের মতো আকাশের বেদীতে ব’সে উৎসবের মন্ত্র জপ ক’রতে লাগলো।