পাতা:নবীন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
নবীন

 বনবন্ধুর যাবার সময় হোলো, কিন্তু হে বনষ্পতি শাল, অবসানের দিন থেকে তুমি অবসাদ ঘুচিয়ে দিলে। উৎসবের শেষ বেলাকে তোমার অক্লান্ত মঞ্জরী ঐশ্বর্য্যে দিল ভরিয়ে। নবীনের শেষ জয়ধ্বনি তোমার বীরকণ্ঠে। সেই ধ্বনি আজ আকাশকে পূর্ণ ক’রলো, বিষাদের ম্লানতা দূর ক’রে দিলে। অরণ্যভূমির শেষ আনন্দিত বাণী তুমিই শুনিয়ে দিলে যাবার পথের পথিককে, বললে, “পুনদ্দর্শনায়।” তোমার আনন্দের সাহস কঠোর বিচ্ছেদের সমুখে দাঁড়িয়ে।

ক্লান্ত যখন আম্রকলির কাল
মাধবী ঝরিল ভূমিতলে অবসন্ন।
সৌরভ-ধনে তখন তুমি হে শাল
বসন্তে করো ধন্য।
সান্ত্বনা মাগি’ দাঁড়ায় কুঞ্জভূমি
রিক্তবেলায় অঞ্চল যবে শুন্য।
বন-সভাতলে সবার উর্দ্ধে তুমি,
সব অবসানে তোমার দানের পুণ্য॥

 দূরের ডাক এসেচে। পথিক, তোমাকে ফেরাবে কে? তোমার আসা আর তোমার যাওয়াকে আজ এক ক’রে দেখাও। যে-পথ তোমাকে নিয়ে আসে, সেই পথই তোমাকে নিয়ে যায়, আবার সেই পথই ফিরিয়ে আনে। হে চিরনবীন, এই বঙ্কিম পথেই চিরদিন তোমার রথযাত্রা; যখন পিছন ফিরে চ’লে যাও সেই