পাতা:নব্য জাপান ও রুষ জাপান যুদ্ধের ইতিহাস - উমাকান্ত হাজারী.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৪
রুষ ও জাপান যুদ্ধের ইতিহাস।

একজন মাত্র রুষসৈন্য জীবিত থাকিতে, রুষের ধমনীতে বিন্দুমাত্র শােণিত থাকিতে আমি আত্মসমর্পণ করিব না।” অবশেষে সেই কঠোর কর্ম্মা সেনাপতি নিরুপায় হইয়া, দুঃখে, ক্ষোভে, অভিমানে জাপান সেনাপতিকে বলিয়াছিলেন,"নগী! আর নয়, আমরা আত্মসমর্পণ করিতেছি।”

 ১৯০৫ খৃঃ ১লা জানুয়ারি তারিখে আর্থার বন্দরস্থিত কি সেনা, কি সামরিক কর্ম্মচারী সকলেই জাপানের নিকটে আত্মসমর্পণ করেন। ইহাতে বন্দরের সমস্ত দুর্গ, গােলাগুলি, বারুদ, বন্দুক, কামান, রণতরি ও বিবিধ বাণিজ্যজাহাজনিচয় জাপান গভর্ণমেণ্টের হস্তগত হয়। দশ বৎসর পূর্ব্বে রুষ যে সম্পত্তি অম্লানবদনে জাপানের নিকট হইতে কাড়িয়া লইয়াছিল, জাপান সেনাপতি নগী কেবলমাত্র জাপানী সেনার সাহায্যে সেই সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করিয়াছেন। কেন জাপানের যশােনিনাদে দিঙ্মণ্ডল প্রতিধ্বনিত হইবে না?

 রুষ কর্ম্মচারিগণ দুর্গরক্ষায় বিশেষ বীরত্ব প্রকাশ করায়, জাপান সেনাপতি প্রস্তাব করেন, যে সমস্ত রুষ কর্ম্মচারী শপথ করিয়া বলিবেন, “আর কখনও জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিব না” তাঁহারা রুষিয়ায় প্রত্যাবর্ত্তন করিতে অধিকার পাইবেন। এই রূপ শপথ করিয়া মহাবীর ষ্টোশেল, ৪৪১ জন কর্ম্মচারী ও ২২৯ আরদালীসহ মুক্তিলাভ করিয়াছিলেন। অবশিষ্ট ৪৩ জন কর্ম্মচারী ও ২৩৪৯১ জন সৈনিক বন্দী হইয়া জাপানে প্রেরিত হয়।

 সৈন্য ও কর্ম্মচারী ব্যতীত, বিজয়ী জাপান সেনাপতি আর্থার বন্দরে ৫৯টী স্থায়ী দুর্গ, ৫৪৬টী কামান, ৩৫ হাজার বন্দুক, ৮২ হাজার শেলগােলা, ১৯ লক্ষ মণ কয়লা, ৪ খানি যুদ্ধ জাহাজ,