পাতা:নব্য জাপান ও রুষ জাপান যুদ্ধের ইতিহাস - উমাকান্ত হাজারী.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৷৹

অপব্যয় না করিয়া, যাহাতে সমাজের চেষ্টায় দেশের অন্নকষ্ট বিদূরিত হয়, শ্রম ও অধ্যবসায়ের ফল সহজে হস্তগত হয়, স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়, নৈতিক ও দৈহিক বল পরিবর্দ্ধিত হয়, আজ সর্ব্বত্রই তাহার জন্য চেষ্টা হইতেছে। ইহা উন্নতির চিহ্ন, মঙ্গলের লক্ষণ।[১]

 কিন্তু হায়! আমাদের অদৃষ্ট ও এসিয়ার বর্তমানাবস্থা স্মরণ করিলে মনে বড় আশঙ্কা হয়। মনে হয়, বুঝি প্রাচ্য গগনের প্রভাত-মার্ত্তণ্ড মধ্যাহ্নের পূর্ব্বেই অস্তমিত হইবে, অষ্টমীর অর্দ্ধ-শশধর অকালেই করাল রাহুর কবলগ্রস্ত হইবে। এসিয়ার, ভারতের, বৌদ্ধধর্ম্মের, আশাভরসা প্রশান্ত মহাসাগরের অতল জলে নিমর্জ্জিত হইবে।

 জননী! ইহাই কি সত্য? যে জাপান আত্ম অস্তিত্ব রক্ষার জন্য, ন্যায্য স্বত্ব রক্ষার জন্য ধর্ম্মযুদ্ধে অগ্রসর হইয়াছে, তাহাকে কি রক্ষা করিবে না?

 যেন কোন দেবতা আবির্ভূত হইয়া এই প্রশ্নের উত্তরে আমাদিগকে বলিতেছেন;“ভয় নাই। পঞ্চকোটী নরনারী যখন একতা-বন্ধনে আবদ্ধ হইয়া আত্মত্যাগ-ব্রত অবলম্বন করিয়াছে, তখন আর কিসের ভয়? যখন প্রত্যেক জাপানীর হৃদয় স্বদেশানুরাগে পরিপূর্ণ রহিয়াছে, তখন আর কাহাকে ভয়? যাহাদের ধর্ম্মকর্ম্ম, যাগযজ্ঞ, কামমােক্ষ, সমস্তই সম্রাট ও স্বদেশানুরাগের অন্তর্ভূত, পৃথিবীতে তাহাদের পরাজয় নাই। যে জাতির বালক হইতে বৃদ্ধ পর্য্যন্ত, পর্ণকুটীরবাসী কৃষক হইতে প্রাসাদবাসী


  1. মৎপ্রণীত “বঙ্গ জাগরণ ও স্বদেশের নানাকথা” দ্রষ্টব্য।