হইয়াছে; এই অসুর,—পার্শ্বোপবিষ্ট অপর অসুরের কেশাকর্ষণ করিতেছে। ১০১ পৃষ্ঠায় অঙ্কিত মূর্ত্তি সমূহ দেখিলেই মনে হয়, ঠিক যেন ভারতের বৃন্দাবনবিলাসিনী শ্রীরাধার প্রতিমা; পার্শ্বে বংশীবাদন তৎপর শ্রীকৃষ্ণ, কোন মূর্ত্তি বা বীণাধারিণী বীণাপাণির বিকৃতি। এই সকল মূর্ত্তির হাব-ভাব ও বেশ-ভূষা দেখিলে, নিশ্চয়ই ভারতীয় বলিয়া প্রতীত হইবে,—রাধা-কৃষ্ণপ্রতিমার পার্শ্বে হ্লাদিনী রসান্যাদিনী সখী-মণ্ডলী। পুস্তকের ১৭০ পৃষ্ঠায় রােমবিগ্রহ অঙ্কিত আছে, ইহা দেখিলেই মনে হইবে,—অবিকল যেন চতুর্ম্মুখ ব্রহ্মারই অনুকরণ! ২৩১ পৃষ্ঠায় যে রোমান-চিত্র বিশেষের প্রতিচিত্র অঙ্কিত আছে, তাহা দেখিলেই মনে হইবে, আমাদেরই শাস্ত্রবর্ণিত সমুদ্র-মন্থনের প্রতিমূর্ত্তি;—সমুদ্র-গর্ভ হইতে চন্দ্র ও উচ্চৈঃশ্রবা অশ্ব উঠিতেছে,—আবার চৈত্রেক-পার্শ্বে সমুদ্র সম্ভব সুধা লইয়া, দেবাসুরে মহাযুদ্ধ বাধিয়া গিয়াছে।
কেবলমাত্র গ্রীক বা রােম দেশে নহে, প্রাচীন মিশর দেশের মূর্ত্তি-প্রসঙ্গেও ভারতীয় দেবদেবীর প্রতিমার লক্ষণ দিব্যরূপ প্রকটিত। উপরি-উক্ত পুস্তকের ১৫৫ পৃষ্ঠায় যে চিত্র অঙ্কিত রহিয়াছে, তাহা দেখিলেই মনে হইবে,—ইহা যেন অবিকল জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রারই প্রতিমূর্ত্তি; জগন্নাথ কৃষ্ণবর্ণ, বলরাম শুভবর্ণ এবং ইঁহাদের উভয়ের মধ্যস্থলে সুভদ্রাদেবী উপবিষ্ট। প্রতিমা-চিত্রে যেরূপ,—সৌধ-মন্দির চিত্রেও সেইরূপ ভারতীয় ভাবানুকরণই পুরা মাত্রায় প্রকটিত। মিশরীয় প্রাচীন মন্দির বিশেষের দৃশ্য যেন ভুবনেশ্বর মন্দির সদৃশ।
এক সময়ে আর্য্যধর্ম্মই যে পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে প্রচলিত ছিল, এই সকল রূপ-প্রতিমা কি তাহার অন্যরূপ পরিচায়ক নহে?