পাতা:নব্য জাপান ও রুষ জাপান যুদ্ধের ইতিহাস - উমাকান্ত হাজারী.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪০
নব্য জাপান

থাকে। সিন্‌জুগণ মস্তক মুণ্ডন করে না। ইহারা বিবাহ গৌরবের বিষয় বলিয়া মনে করে। সিন্‌জুদিগের একটী বিশেষত্ব এই যে, ইহারা গাত্রবস্ত্রে ও শিরস্ত্রাণে স্বীয় নাম ও বাসস্থান প্রভৃতি আবশ্যকীয় পরিচয় লিখিয়া রাখে। ইহারা মাসের প্রথম, পঞ্চদশ ও অষ্টাবিংশতি দিবসে উপাসনা ভিন্ন অন্য কোন গৃহকার্য্য করে না। সিনজুগণ রাজাজ্ঞাপালন, তীর্থ ভ্রমণ, ভিখারীভোজন, পুণ্যদিনে দান করণ ইত্যাদি কার্য্য ইহলোক ও পরলোকের কল্যাণপ্রদ বলিয়া বিশ্বাস করে।

 খৃষ্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে চীনদেশীয় প্রচারকগণ জাপানে বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচার করিতে আরম্ভ করেন। এই সময়ে জাপানে শিণ্টোধর্ম্ম, ভারতীয় তান্ত্রিকধর্ম্ম ও চীনদার্শনিক কনফিউসিয়াস্ প্রবর্ত্তিত একটী প্রাচীন ধর্ম্ম বিদ্যমান ছিল।

 এক্ষণে জাপানের অধিকাংশ ব্যক্তিই বৌদ্ধধর্ম্মাবলম্বী। প্রায় প্রতি পল্লীতেই বৌদ্ধধর্ম্মমন্দির ও যাজক দেখিতে পাওয়া যায়।

 জাপানে প্রত্যেক গৃহস্থের বাটীতে তিনটী পবিত্র স্থান আছে। প্রথম, কামিদানা অর্থাৎ সৃষ্টিকর্ত্তা ভগবানের পূজাস্থান; দ্বিতীয়, বুদসুদান অর্থাৎ বুদ্ধবেদী; তৃতীয়, ইউজি-গেমি অর্থাৎ কুলদেবতা-গৃহ। এই সকল স্থানে প্রত্যহ যথারীতি পূজা হইয়া থাকে। সিনজুগণ দেবতার সম্মুখে দর্পন, শুভ্রবস্ত্র ও পানপাত্র স্থাপন করিয়া চাউল, সাকি ও বিবিধ মৎস্যসহযোগে উপাসনায় প্রবৃত্ত হইয়া থাকে। বৌদ্ধগণ দেবপূজায় মৎস্য ব্যবহার করে না। টৌরীশাখা, কদলীপত্র ও বিচালিনির্ম্মিত রজ্জু দেবকার্য্যে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। পূজাগৃহে প্রত্যহ দীপদান করা হয়।