পাতা:নব্য জাপান ও রুষ জাপান যুদ্ধের ইতিহাস - উমাকান্ত হাজারী.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নব্য জাপান ৷
৪৭

 বালিকাবধূ বিবাহের অল্পদিবস পরেই পতিগৃহে গমন করিয়া থাকে। তথায় তাহাকে শ্বশ্রূঠাকুরাণীর সম্পূর্ণ শাসনাধীনে বাস করিতে হয়। তাহাকে প্রত্যুষে সকলের অগ্রে শয্যা হইতে গাত্রোত্থান করিয়া সংসারের যাবতীয় কর্ম্ম সম্পন্ন করিতে হয়। জাপানী যুবতীরা আপনাদিগকে পতির সমকক্ষ বলিয়া ধারণা করে না। তাহারা স্বামীকে দেবতার ন্যায় ভক্তি করিয়া থাকে। স্বামী অসচ্চরিত্র হইলেও তাহারা অসূয়া-পরবশ হয় না। তাহাদের বিশ্বাস, প্রবৃত্তি শান্ত হইলেই, স্বামীর চরিত্র আপনিই শােধিত হইয়া যাইবে। জাপানীবধূর ভালবাসা অপরিসীম হইলেও তাহা ইয়ুরােপীয় ললনাগণের ভালবাসার ন্যায় উদ্দাম ও চাঞ্চল্যপরিপূর্ণ নহে। ফলতঃ জাপানী স্ত্রীই পতি হৃদয়ের চির প্রহ্লাদিনী; সংসার সরােবরের প্রফুল্ল কমলিনী; সংসার তরুর বিনােদ বল্লরী; শান্তিকুঞ্জের সুরভি মল্লিকা।[১]

 প্রাচীন ও মধ্যযুগে জাপানে বহু বিবাহ প্রচলিত ছিল। তৈহো সংহিতা নামক জাপানের প্রাচীন ধর্ম্মশাস্ত্রের ব্যবস্থানুসারে ভার্য্যা ব্যাভিচারিণী, মিথ্যাভাষিনী, শ্বশ্রূজনবিদ্বেষিনী, কন্যাপ্রসবিনী, চৌর্যাদি দোষাক্রান্তা ও পীড়িতা হইলে স্বামী অধিবেদন করিতে পারিত।[২] এক্ষণে স্ত্রী ব্যাভিচারিণী, অভি-


  1. জাপানের স্ত্রী-শিক্ষানীতি কিরূপ আনন্দপ্রদ, জাপানী মহিলাগণের চরিত্র কিরূপ উন্নত ইহা বিশদরূপে অবগত হইতে হইলে “Unbeaten tracks in Japan” অর্থাৎ “অগম্য পূর্ব্ব জাপান” নামক গ্রন্থখানি পাঠ করা কর্ত্তব্য।
  2. “তৈহো সংহিতার” সহিত অস্মদীয় মনুসংহিতা প্রভৃতির বিশেষ সাদৃশ্য লক্ষিত হয়। অধিবেদন সম্বন্ধে মনু লিখিয়াছেন;