পাতা:নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি - প্রফুল্লচন্দ্র রায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নব্য ৰসায়নী বিদ্যা কিয়দংশ যখন পারদসংযােগে অপসারিত হইল তখন অভ্যন্ত বিক বায়ুর চাপ অপেক্ষাকৃত কমিয়া গেল; সুতরাং বাহিরের বায়ুর চাপ (atmospheric pressure) বশতঃ পারদ ক্রমশঃ খ পাত্রের ভিতর উঠিতে লাগিল। পল্লিগ্রামের অনেক বালকই পেপের ভাটা দিয়া পেজুর রস টানিয়া খায়। ভিতরের বাতাস টানিয়া লইলেই রস ক্ৰমশঃ নলের ভিতর উঠিতে থাকে। লাবােয়াসিয়ে এই পরীক্ষা দ্বারা প্রতিপন্ন কবিলেন যে সাধারণ বায়ুতে এমন এক উপাদান আছে বাহা উত্তাপ প্রয়োগে পারদের সহিত সংযুক্ত কয়। অর্থাৎ এই লােহিত।র্ণ ভস্ম এক টা যৌগিক পদার্থ। এই যৌগিক পদার্থ পুনৰ্ব্বার তীব্রতররূপে উত্তপ্ত হইলে বিশ্লিষ্ট হয়। এবং উপরিউক্ত বায়বীয় উপাদান বহির্গত হইয়া কেবল পারদ পড়িয়া থাকে। লাবোয়াসিয়ে আরও বুঝলেন যে বঙ্গ যখন মারিত হয় তখনও বায়ু হইতে এই উপাদান পৃথক হইয়া বঙ্গের সহিত মিলিত হয়। অপর পক্ষে মারণ প্রক্রিয়ার শেষে বায়ুর বে অন্যতর উপাদান অবশিষ্ট থাকে তাহা দ্বারা আর দহন ক্রিয়া সম্পন্ন হয় না । এই পরীক্ষা দ্বার। আরও সপ্রমাণ হইল যে মরুৎ বা বায়ু একটা মূল পদার্থ নহে, পরন্তু উহাতে অন্ততঃ দুইটা বায়বীয় পদার্থ বিদ্যমান আছে। বােয়াসিয়ের এই অপূৰ্ব আবিষ্কার রসায়ণ জগতে যুগান্তর উপস্থিত করিল। ইহা দ্বারা আরবীয় ও ষ্টাল প্রমুখ রসায়নশাস্ত্রবিদগণের মতগুলি বিধ্বস্ত হইল i ফ্লজিষ্টনবদিগণ তুমুল আন্দোলন করিলেও অবশেষে লাবােয়াসিয়ের মতই বলবৎ রহিল। বায়ুর এই নবাবিষ্কৃত উপাদান, যাহা ধাতু ও অন্যান্য শাহ পদার্থের সহিত সংযুক্ত হয়, তাহার নাম হইল অম্লজান বা অসিজেন (oxygen)।