পাতা:নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি - প্রফুল্লচন্দ্র রায়.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৬৬
নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি
৬৬

নব্য সায়নী বিদ্যা বেকারেল ইউনিয়ম হইতে উৎপন্ন যে সকল রশ্মি আবিষ্কার করেন, তাহা তাহার সম্মানার্থ “বেকারেল রশ্মি” নামে অভিহিত হই- য়াছে। এই সকল বেকারেল রশ্ম ফটো তােলা ছাড়া অন্য অনেক আশ্চৰ্যগুণবিশিষ্ট। জলীয় বাষ্পকণাবিহীন বায়ু তড়িতের গতির প্রতিরােধ করে, ইহা তড়িৎপরিচালক নয়। বেকারেল রশ্মি এইরূপ বায়ুর ভিতর দিয়া গমন করিলে, অপরিচালক বায়ুকে পরিচালক করিয়া তােলে। এই গুণ নির্ধারণ করিবার জন্য স্বর্ণপদ্ব বিশিষ্ট একটি তড়িৎপরিমাপক যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। এই যন্ত্র অতি সরল। শুধু একটি কাচের আববণের ভিতর দুইটি স্বর্ণপত্র ঝোলান আছে। বৈদু- তিক শক্তি নিকটে আসিলে সমভাবসম্পন্ন একই তড়িতের বিকর্ষণশক্তি, প্রভাবে পত্ৰ দুইটা বিস্ফারিত হয়। পত্র হইতে তড়িৎ অপসারিত হইলে, আবার পর দুইটা একত্রিত হয়। ইউনিয়মযুক্ত পদার্থ নিকটে আসিলে বিক্ষারিত পত্র দুইটা তৎক্ষণাৎ একত্রিত হয়, কেননা বেকারেল রশ্মি প্রভাবে কাচ আবরণের মধ্যস্থ বায়ু, য, পরিচালনগুণশালী হইয়া তড়িৎ অপহরণ করে। যে যকল পাথ এইরূপ অন্ধকারে ফটো তুলিতে এবং অপরিচালক বায়ুকে পরিচালক করিতে পারে তাহা- দিগকে radioactive বা সক্রিয় বলা যাইতে পারে । সুতরাং এইরূপ ক্ষমতাবিহীন পদার্থের নাম নিষ্ক্রিয় হইবে। মাদাম কুরী এইরূপে ইউনিয়মের কতিপয় বিভিন্ন যৌগিক পদার্থের বিকিরণ শক্তির পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া দেখিলেন যে তাহারা প্রায় সমানশক্তিশালী। একখণ্ড ইউনিয়ম ধাতু লইয়া দেখা গেল যে তাহারও বিকিরণ শক্তিপরিমাণে বিশেষ বিভিন্ন নয়। কিন্তু ইউরানিয় ধাতু যে প্রস্তর হইতে প্রস্তুত হয় সেই পিচব্লেণ্ড, ইউনিয়ম অপেক্ষা বহুগুণশক্তিশালী বলিয়া পরীক্ষায় প্রমাণ হইল।