পাতা:নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি - প্রফুল্লচন্দ্র রায়.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৭৪
নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি
৭৪

৭৪ নব্য রসায়নী বিদ্যা যাহারা এই বিদ্যার চর্চা করিতেন লােকে তাহাদিগকে“স্বাদুকর’ বলিত। এই ঐন্দ্রজালিক বা পৈশাচিক বিদ্যা আলােচনা করার জন্য তখন বেকনকে অক্সফোর্ডের একটী নিভৃত কক্ষে চতুর্দশ বৎসর কারারুদ্ধ থাকিতে হইয়াছিল। যাহারা তখন প্রাকৃততত্ত্ব বা পদার্থবিদ্যা আলােচনা করিয়া জ্ঞানান্বেষণে ব্যাপৃত থাকিতেন, তাহাদিগকে এই প্রকারে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিতে হইত। পূৰ্বে উল্লিখিত হইয়াছে যে, জল অতি পুরাকাল হইতে মৌলিক পদার্থ এবং পঞ্চভূতের মধ্যে অন্যতম বলিয়া সাধা- বর ধারণা ছিল। পরে কাবেণ্ডিস প্রভৃতি প্রসিদ্ধ রাসায়নিক পণ্ডিতগণের পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ হইয়াছে যে, জল মৌলিক পদার্থ নয়, সম্পূর্ণ যৌগিক পদার্থ এবং দুইটী অদৃশ্য বায়বীয় পদার্থের রাসায়নিক সংযােগে উৎপন্ন। আধুনিক সমুদয় মৌলিক পদার্থ সকলের এইরূপ ধারণা থাকা আবশ্যক। আমরা সকল পদার্থকে এখন মৌলিক পদার্থ বলিয়া গণ্য করিতেছি, তাহাদের মৌলিকত্ব সম্বন্ধেও এইরূপ সংশয় সহজেই আসিয়া থাকে। অর্থাৎ কোন মৌলিক পদার্থ হইতে যদি কোনরূপ অভিনব প্রক্রিয়া দ্বারা ভবিষ্যতে আরও নূতন পদার্থ আবিস্কৃত হয়, তখন তাহার মৌলিকত্ব লুপ্ত হইয়া তাহাকে যৌগিক পদার্থ বলিয়া গণ্য করিতে হইবে। রবাট বলে তাহার ‘সংশয়বাদী 'রাসায়নিক” নামক পুস্তকে লিখিয়াছেন যে সমস্ত মৌলিক পদার্থের পূর্ণ সংখ্যা নির্ণয় করা অসম্ভব, অর্থাৎ যে, সকল পদার্থকে অদ্যাপি কোন- রূপ প্রক্রিয়া দ্বারা বিশ্লিষ্ট করিতে পারা যায় নাই, তাহাদিগকে আপাততঃ মৌলিক পদার্থ বলিয়া স্বীকার করিতে হইবে। তিনি কোনও শাস্ত্রকে অভ্রান্ত বলিয়া মনেন নাই এবং চিরপ্রচলিত সম্বন্ধেও