পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

d) O R नन- . বারো মাসে বারো কিস্তিতে রাখতে হবে, তার যে মাঝে মাঝে । খেলাপ হবার সম্ভাবনা নেই-এ জাক করুবার মত দুঃসাহস আমাদের নেই। তা ছাড়া স্বদেশের কিম্বা স্বজাতির কোনও একটি অভাব পূরণ করা, কোনও একটি বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করা সাহিত্যের কাজও নয়, ধৰ্ম্মও নয় ; সে হচ্ছে কাৰ্য্যক্ষেত্রের কথা । কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যকে অবলম্বন করাতে মনের ভিতর যে সঙ্কীর্ণতা এসে পড়ে, সাহিত্যের স্মৃত্তির পক্ষে তা অনুকুল নয়। কাজ হচ্ছে দশে মিলে করুবার জিনিস। দলবদ্ধ হয়ে আমরা সাহিত্য গড়তে পারি নে, গড়তে পারি শুধু সাহিত্য-সম্মিলন। কারণ দশের সাহায্যে ও সাহচর্য্যে কোনও কাজ উদ্ধার করতে হলে, নিজের স্বাতন্ত্র্যটি অনেকটা চেপে দিতে হয়। যদি আমাদের দশজনের মধ্যে মনের চোঁদ-আনা মিল থাকে, তাহলে প্ৰতিজনে বাকি দু-আনা বাদ দিয়ে, একত্র হয়ে সকলের পক্ষে সমান বাঞ্ছিত কোনও ফললাভের জন্য চেষ্টা করতে পারি। এক দেশের, এক যুগের, এক সমাজের বহু লোকের ভিতর মনের এই চৌদ-আনা মিল থাকলেই সামাজিক কাৰ্য্য সুসম্পন্ন করা সম্ভব হয়, নচেৎ নয়। কিন্তু সাহিত্য হচ্ছে ব্যক্তিত্বের বিকাশ। সুতরাং সাহিত্যের পক্ষে মনের ঐ পড়েপাওয়া-চৌদ্দ আনার চাইতে, ব্যক্তিবিশেষের নিজস্ব দু-আনার। মূল্য ঢের বেশি। কেননা ঐ দু-আনা হতেই তার সৃষ্টি এবং স্থিতি, বাকি চোঁদ-আনায় তার লয়। যার সমাজের সঙ্গে । ষোল-আন মনের মিল আছে, তার কিছু বক্তব্য নেই। মন পদার্থটি মিলনের কোলে ঘুমিয়ে পড়ে, আর বিরোধের স্পর্শে জেগে ওঠে। এবং মনের এই জাগ্ৰত ভাব থেকেই সকল কাব্য, সকল দর্শন, সকল বিজ্ঞানের উৎপত্তি।