পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইউরোপে কুরুক্ষেত্র। Scy না। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে জাৰ্ম্মানী বুদ্ধিবলে ও বাহুবলে ইউরোপে আত্মপ্রতিষ্ঠা করেছে। ইউরোপে আজ জাৰ্ম্মানী যে সর্বাগ্রেগণ্য সর্বশক্তিশালী জাতি, সে বিষয়ে আর দ্বিমত নেই। তারপর বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে জাৰ্ম্মানী সমগ্ৰ পৃথিবীতে আত্মপ্রতিষ্ঠা করাটা তার জাতীয় কৰ্ত্তব্য বলে স্থির করেছে। শুধু ইউরোপে নয়, সসাগরা বসুন্ধরায় সর্বেসর্বা হওয়া জাৰ্ম্মানীর কপালে লেখা আছে, এবং বিধাতার সে লিপি। কেউ খণ্ডন করতে পারবেন না, কেননা এ ক্ষেত্রে অদৃষ্ট ও পুরুষকার একত্রে মিলিত হয়েছে। Prince Bulow-র মতে জাৰ্ম্মান-জন-সাধারণের বীৰ্য্য আছে। অতএব ধৈৰ্য্য আছে, শক্তি আছে অতএব সংযম আছে, সাহস আছে। অতএব ভরসা আছে। অপরপক্ষে জাৰ্ম্মান রাজপুরুষেরা বিদ্বান ও বুদ্ধিমান, বহুদশী ও দূরদর্শী, একাগ্র ও একনিষ্ঠ। বাহুবল এবং বুদ্ধিবলের এহেন মিলন পৃথিবীর কুত্ৰাপি আর হয় নি। পূর্বোক্ত কারণে জাৰ্ম্মানী তার মহত্ত্বের ও প্রভুত্বের ব্ৰত উদযাপন করতে বাধ্য। সমস্ত পৃথিবীর উপর Made in Germany এই ছাপ মেরে দেওয়াটাই হচ্ছে জাৰ্ম্মান-রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য । জাৰ্ম্মানী যে মন্ত্রের সাধনা করছে, Prince Bulow-র মতে তার সিদ্ধির পথে দুটি অন্তরায় আছে-এক ফ্রান্সের। শক্ৰতা, আর এক ইংলণ্ডের প্রতিদ্বন্দ্বীতা । ফ্ৰান্স জাৰ্ম্মানীর চিরশত্রু ; তার স্পষ্ট কারণ এই যে, ফুন্সে আজও আলসেস লোরেনের কথা ভুলতে পারে নি, আর তার গুঢ় কারণ এই যে, ফ্ৰান্স আজও তার পূর্ব ইতিহাস ভুলতে পারে নি। প্রায় তিনশত বৎসর ধরে ফ্ৰান্স ইউরোপের হৰ্ত্তা-কৰ্ত্তাবিধাতা ছিল। এই অতীত গৌরবকাহিনী ফ্রান্সের