পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভিভাষণ । । " २०१ এ আসন গ্ৰহণ করিবার অধিকার যে আমার নাই, তাহা আমার নিকট অবিদিত নয়। আমি অবসরমত সাহিত্যচৰ্চা করি, কিন্তু সে গৃহকোণে এবং নির্জনে। বক্তা ও লেখক এক- “ জাতীয় জীব নন; ইহাদের পরস্পরের প্রকৃতিও ভিন্ন, রীতিও ভিন্ন। বক্তা চাহেন, তিনি শ্রোতার মন জবরদখল করেন, অপর পক্ষে লেখক, পাঠকের মনের ভিতর অলক্ষিতে এবং ধীরে ধীরে প্রবেশ করিতে চাহেন । বক্তা শ্রোতার মনকে বিশ্রাম দেন না ; লেখক পাঠকের অবসরের সাখী। অক্ষরের নীরব ভাষায় একটি অদৃশ্য শ্রোতার কানে-কানে আমরা নানা ছলে নানা কথা বলিতে পারি ; কিন্তু জনসমাজে আমাদের সহজেই বাকুরোধ হয়। যে বাণী সবুজপত্রের আবডালে প্রস্ফুটিত হইয়া উঠে তাহা সূর্ঘ্যের নগ্ন কিরণের স্পর্শে মিয়মাণ হইয়া পড়ে। অথচ গুণীসমাজে সুপরিচিত হইবার লোভও আমাদের পূরামাত্রায় আছে। সাহিত্যের রঙ্গভূমিতে দর্শকের নয়ন-মন আকর্ষণ করিবার জন্য আমরা নিত্য লালায়িত, অথচ লেখকের ভাগ্যে পাঠকের সাক্ষাৎকার-লাভ কচিৎ ঘটে। প্ৰশংসার পুষ্পবৃষ্টি এবং নিন্দার শিলাবৃষ্টি উভয়ই আমাদের শিরোধাৰ্য্য-একমাত্র উপেক্ষাই আমাদের নিকট চির-অসহ্যু। সুতরাং সাহিত্য-সমাজে যথাযোগ্য আসন লাভ করাতেই আমরা কৃতাৰ্থতা লাভ করি। দণ্ডী বলিয়াছেন যে “কৃশো কবিত্বেপি জনাঃ কৃতাশ্রম বিদগ্ধগোষ্ঠীষু বি-হতুর্মােশতে।” আমাদের ন্যায় প্ৰতিভাবঞ্চিত লেখকদিগের সকল শ্রম। বিদগ্ধ-গোষ্ঠীতে স্থানলাভ করাতেই সার্থক হয়। অতএব অন্য কারণভাবেও অন্তত দুদিনের জন্যও উত্তর-বঙ্গের বিদগ্ধগোষ্ঠীর ՀԵ