পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\t8 SR 5-९ ।। ফরাসী-সাহিত্য আমাদের এই যন্ত্রকে লঘু করতে, তীক্ষা করতে শেখায়। এ শিক্ষা আমরা সহজেই আত্মসাৎ করতে পারি, কেননা আমার বিশ্বাস বাঙলার সঙ্গে ফরাসী-ভাষার বিশেষ সাদৃশ্য আছে। আমাদের ভাষাও মূলত এক, এবং বিদেশী শব্দে তা” ভারাক্রান্ত নয়। আমাদের ভাষার অন্তরেও ফরাসীভাষার গতি ও স্মৃত্তি নিহিত আছে। বিদ্যাসুন্দরের ন্যায় কাব্যগ্রন্থ, জৰ্ম্মানের ন্যায় স্থূলকায়, গুরুভার, শ্ৰীপদ ও গজেন্দ্রগামী ভাষায় রচিত হওয়া অসম্ভব । আমার বিশ্বাস ভারতচন্দ্র। যদি ফুন্সে জন্মগ্রহণ করতেন, তাহলে তার প্রতিভা অনুকুল অবস্থার ভিতর আরও পরিস্ফুট হয়ে উঠত, এবং তার রচনা ফরাসী-সাহিত্যের একটি masterpiece বলে’ গণ্য হত। আমরা যে ভাষায় এখন সাহিত্য রচনা করি, সে ভারতচন্দ্রের ভাষা নয়, ইতিমধ্যে ইংরাজী-সাহিত্যের অনুকরণে আমরা সে ভাষার গৌরব বৃদ্ধি করেছি, অর্থাৎ তার গায়ে একরাশ মুখস্থকরা শব্দ চাপিয়ে তার ভার বৃদ্ধি করেছি। — তার গতি মন্দ করেছি। ফরাসী সাহিত্যের শিক্ষা আমাদের মনে বসে’ গেলে আমরা আবার বহুসংখ্যক পণ্ডিতি শব্দকে সসম্মানে বিদায় করব, এবং তার পরিবর্তে বহুসংখ্যক তথাকথিত ইত্যর শব্দকে সাহিত্যে বরণ করে” নেব । কেননা এই কৃত্ৰিম ভাষার চাপে আমাদের জাতীয় প্রতিভা মাথা তুলতে পারছে না। জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৩ সন ।