পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७२ भन्न-२ ॥ রং হচ্ছে কালে রং। সুতরাং আমাদের নূতন সভ্যতা শুভ্র বসন ত্যাগ করে কৃষ্ণচ্ছদ অবলম্বন করেছে। শ্বেতবর্ণ আলোকের রং, সকল বর্ণের সমাবেশে তার উৎপত্তি ; আর কৃষ্ণবর্ণ অন্ধকারের রং, সকল বর্ণের অভাবে তার উৎপত্তি। আমরা করজোড়ে ইউরোপীয় সভ্যতার কাছে প্রার্থনা করেছি যে, “আমাদিগকে আলোক হইতে অন্ধকারে লইয়া যাও”-এবং আমাদের সে প্রার্থনা মঞ্জুর হয়েছে। আমরা ইউরোপীয় সভ্যতার খিদমদগারির পুরস্কারস্বরূপ হাট নামক কিস্তুতকিমাকার এক চিজ শিরোপা লাভ করেছি, তাই আমার আনন্দে শিরোধাৰ্য্য করে নিয়েছি। কিন্তু ইংরাজি পোষাক আমাদের পক্ষে শুধু যে অসুখকর এবং দৃষ্টিকটু তা নয়। বেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ লোকের মনের পরিবর্তনও অবশ্যম্ভাবী। পুরোহিতের বেশ ধারণ করলে মানুষকে হয় ভণ্ড নয়। ধাৰ্ম্মিক হতে হয়। সাহেৰি কাপড়ের সঙ্গে মনেও সাহেবিয়ানার ছোপ ধরে। হাট-কোট ধারণ করলেই বঙ্গসন্তান ইংরাজি এবং হিন্দি এই দুই ভাষার উপর, অধিকার লাভ করুবার পূর্বেই অত্যাচার করতে সুরু করেন। গলায় “টাই” বাধলেই যে সকলকেই ইউরোপীয় সভ্যতার নিকট গললগ্নীকৃতবাস হ’তে হবে, এ কথা আমি মানিনে। যে মনে দাস, সে উত্তরীয়কেও গলবস্ত্রস্বরূপ ব্যবহার করে থাকে। তবে “টাই” যে মনকে সাহেবিয়ানার অনুকুল করে নিয়ে আসে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ইউরোপের মোহ কাটাতে হলে ইউরোপীয় বসন “বয়কট” করাই শ্ৰেয় । ইউরোপবাসীর বেশে এবং এসিয়াবাসীর বেশে একটা মূলগত প্ৰভেদ আছে। ইউরোপের বেশের উদ্দেশ্য দেহকে বাধা, আমাদের উদ্দেশ্য দেহকে ঢাকা। আমাদের চেষ্টা দেহকে লুকানো, ওদের চেষ্টা