পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধুভাষা বনাম চলিত ভাষা। ৬১ আমরা বলে’ দিতে পারি যে, তার মধ্যে কোনটি সোজা আর কোনটি উণ্টো। -i. সবদিক রক্ষা করে' চলাবার উদ্দেশ্য এবং অর্থ হচ্ছে নিজেকে রক্ষা করা। আমরা সামাজিক জীবনে নিত্যই সে কাজ করে থাকি। কিন্তু কি জীবনে, কি সাহিত্যে, কোন একটা বিশেষ মত কি ভাবকে প্রাধান্য দিতে না পারলে, আমাদের যত্ন, চেষ্টা এবং পরিশ্রম, সবই নিরর্থক হয়ে যায়। মনোজগতেও যদি আমরা শুধু ডাঙ্গায় বাঘ আর জলে কুমীর দেখি, তাহলে আমাদের পক্ষে তটস্থ হয়ে থাকা ছাড়া উপায়ান্তর নেই। সে যাইহােক, যখন লেখবার একটা বিশেষ রীতি সাহিত্যে চলন করা নিয়ে কথা, তখন আমাদের একটা কোন দিক অবলম্বন করতেই হবে। কেননা একসঙ্গে দু’দিকে চলা অসম্ভব। তাছাড়া যখন দুটি পথের মধ্যে কোনটি ঠিক পথ, এ সমস্যা একবার উপস্থিত হয়েছে, তখন—“এ পথও জানি ও পথও জানি, কিন্তু কি করুব মরে’ আছি”, এ কথা বলাও আমাদের মুখে শোভা পায় না; কারণ বাজে লোকে যাই মনে করুক না কেন, সাহিত্যসেবী এবং অহিফেনসেবী একই শ্রেণীর জীব নয়। ] i ললিত বাবুর মতে “সাধুভাষা বনাম চলিতভাষা, এই মামলার মীমাংসা করিতে হইলে, আধা ডিক্ৰী আধা ডিসমিসূ ছাড়া উপায় নাই।” এর উত্তরে আমার বক্তব্য এই যে, তরমিন ডিক্ৰীলাভে বাদীর খরচা পোষায় না। ওরকম জিত প্ৰকারান্তরে হার। এক্ষেত্রে আমরা যে বাদী, সে বিষয়েও কোন সন্দেহ নেই, কারণ আমাদের নাবালক অবস্থায় সাধুভাষীদের দল।