বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নারীর মূল্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯
নারীর মূল্য

ধর্মগ্রন্থ লিখিবার সময় পুরুষ নারী-জাতিকে কি শ্রদ্ধাই দেখাইয়া গিয়াছে। মধ্যযুগের প্রসিদ্ধ সেণ্ট বার্নার্ড (ইনিও ‘সেণ্ট’) জননীর উদ্দেশে পত্র লিখিয়াছেন—

 What have I to do with you? What have I received from you but sin and misery? Is it not enough for you that you have brought me into this miserable world, that you being sinners have begotten me in sin. . . . . .

 আজ ইয়োরোপবাসীরা অহঙ্কার করিয়া বলে, তাহারা যেমন নারীর dignity বোঝে, এমন আর কেহ নহে। অথচ, নারী-জাতিকে গত ১৩-১৪ শত বৎসর ধরিয়া যেরূপ অসহ্য ঘৃণা করিয়াছে, যত ক্লেশ দিয়াছে, যত অবনত করিয়াছে, তত আর কোন জাতি করিয়াছে কি না সন্দেহ। ইহাদের sacerdotal celibacyর ইতিহাস প্রভৃতির পাতায় পাতায় যে পুণ্য-কাহিনী লিপিবদ্ধ হইয়া আছে, তৎসত্বেও ইহাদের মুখের শ্রদ্ধা-ভক্তির কথা উপহাস ব্যতীত যে আর কি হইতে পারে জানি না।

 যে ধর্ম বনিয়াদ গড়িয়াছে, আদিম জননী ইভার পাপের উপর যে ধর্ম সংসারের সমস্ত অধঃপতনের মূলে নারীকে বসাইয়া দিয়াছে, সে ধর্ম সত্য বলিয়া যে কেহ অন্তরের মধ্যে বিশ্বাস করিয়াছে, তাহার সাধ্য নয় নারীজাতিকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। তাহার শ্রদ্ধা শুধু ততটুকুই হইতে পারে, যতটুকুতে নিজের স্বার্থ জড়িত হইয়া আছে। তাহার অধিক শ্রদ্ধাই বল, ন্যায্য অধিকারই বল, সহস্র বৎসর পূর্বেও পুরুষে দেয় নাই, সহস্র বৎসর পরেও দিবে না। মিল সাহেব তাহার Subjection of Women গ্রন্থে 'isolated' বলিয়া মিথ্যা দুঃখ করিয়া গিয়াছেন।

 শুনিতে পাই এক মহানির্বাণতন্ত্রের “কূন্যাপেবং পালনীয় শিক্ষণীয়া তিযত্নতঃ” আদেশ ছাড়া আর কোন শাস্ত্রেইনারীকে শিক্ষা দিবার হুকুম নাই। স্বর্গীয় অক্ষয় দত্ত মহাশয় তাহার ‘ভারতবর্ষার উপাসক সম্প্র-