ঠিক ততটা কাজ করিবার অবকাশ দেওয়া হইতেছে কি না, তাহাও বুঝায়। সেইটুকুই বুঝিতে বলিতেছি।
আরও একটা কথা এই যে, পুরুষের সমস্ত কাজ নারী করিতে পারে না, নারীর সমস্ত কাজও পুরুষে করিতে পারে না; কিংবা যে কর্তব্য দু’জনে মিলিয়া করিলে তবেই সুসম্পন্ন হয়, তাহাও শুধু একার দ্বারা সর্বাঙ্গসুন্দর হইতে পারে না! অতএব, সমস্ত সমাজেরই দেখা উচিত, তথায় নারীর কর্তব্য প্রতিপালিত হইতেছে কি না, এবং কাজ করিবার ন্যায্য স্বাধীনতা ও প্রশস্ত স্থান তাহাদিগকে ছাড়িয়া দেওয়া হইয়াছে কি না। জেলের কয়েদীদিগের কাছেও ভাল কাজ আদায় করিয়া লইতে হইলে, তাহাদের শৃঙ্খলের ভার লঘু করিয়া দেওয়া প্রয়োজন। অবশ্য শৃঙ্খল একেবারে মুক্ত করিয়া দিবার কথা বলিতেছি না—তাহাতে আমেরিকার মেয়েদের দশা ঘটে। তাহাদের অবাধ স্বাধীনতা উচ্ছৃঙ্খলতায় পর্যবসিত হইয়াছে। একদিন প্রাচীন রোমে আইন পাশ করিতে হইয়াছিল “to prevent great ladies from becoming public prostitutes.” কোথায় একবার পড়িয়াছিলাম, তিব্বতে এক স্ত্রীর বহু-স্বামিত্বের প্রসঙ্গে গ্রন্থকার বোধ করি একটুখানি পরিহাস করিয়াই বলিয়াছেন—এ-সব কথা লিখিতে ভয় হয়, পাছে আমেরিকার নারীরাও খেয়াল ধরিয়া বসে আমরাও ওই চাই। তাহাদের ব্যাপার দেখিয়া পায় সমস্ত পুরুষেরই হাত-পা পেটের মধ্যে ঢুকিয়া যাইবার মত হইয়াছে। তাই কতকটা শৃঙ্খলের প্রয়োজন। অপরপক্ষে, শৃঙ্খল একেবারে ঝাড়িয়া ফেলিয়া দিলে পুরুষেরাও যে কত অবিচারী, উদ্ধত উচ্ছৃঙ্খল হইয়া উঠে এই ভারতবর্ষেই সে-দৃষ্টান্তের অসদ্ভাব নাই।
যাহাই হৌক, কথা হইতেছিল কাজ করিবার ন্যায্য স্বাধীনতা এবং ন্যায্য স্থান ছাড়িয়া দেওয়া, এবং কোন্ কাজটা কাহার, এবং কোন্ কাজটা উভয়ের এই মীমাংসা করিয়া লওয়া। মানব-সমাজের যত নিম্নস্তরে অবতরণ করা যায়, ততই চোখে পড়িতে থাকে, এই ভুলটাই