পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ Σ Σ রাখা সম্বন্ধে বিষম। আপত্তি । একদিন একজন হাড়ি তাড়ী খাইয়া আসিয়া হিন্দুধৰ্ম্মের পক্ষ হইতে দুই ঘণ্টা বক্তৃতা দিয়া মুরগী পালনের ষে রকম ভীষণ প্ৰতিবাদ করিয়া গেল, তাহাতে তাড়াতাড়ি মুরগী কয়টাকে বেচিয়া ফেলা ছাড়া আর আমাদের উপায়ান্তর রহিল না। হাড়ি বাবুটীর নাম ভুলিয়া গিয়াছি। তা’ না হইল ব্ৰাহ্মণসভায় লিখিয়া তাহাকে একটা উপাধি জোগাড় করিয়া দিতাম । আমাদের বাজে খরচের মধ্যে ছিল-চা । ওটা না থাকিলে সংসার নিতান্তই ফিকে ফিকে, অনিত্য বলিয়া মনে হইত। বিশেষতঃ বারীন চা বানাইতে সিদ্ধহস্ত। তাতার হাতের গোলাপী চা, ভাঙ্গা নারিকেলের মালায় ঢালিয়া চক্ষু বুজিয়া তারিফ করিতে করিতে খাইবার সময় মনে হইত যে, ভারত-উদ্ধারের ষে কয়টা দিন বাকি আছে, সে কয়টা দিন যেন চা খাইয়াই কাটাইয়া দিতে পারা যায়। প্ৰথম দিনেই বারীন আইন জাহির করিয়া দিল যে, নিজে রাধিয়া থাইতে হইবে। এক আধা জন ত রাধিবার ভয়ে বাগান ছাড়িয়া পলাইয়াই গেল ; কিন্তু তা বলিয়া বাগানের ভিতর ত আর বাহিরের লোককে ঢুকিতে দেওয়া। যায় না।--বিশেষতঃ পয়সার অভাব। কিন্তু চিরদিন বাড়ীতে মায়ের হাতের আর মেসে ঠাকুরের হাতের রান্না খাইয়া আসিয়াছি। সাধুগিরির সময় ভিক্ষা করিয়া যা খাইয়াছি তাও পরের হাতের রান্না । আজ এ আবার কি বিপদ ! পালা করিয়া প্ৰত্যহ দুই দুই জনের উপর রান্নার ভার পড়িল । সুতরাং আমাকেও মাঝে মাঝে রন্ধনপবদ্যার নিগৃঢ় রহস্য লইয়া নাড়াচাড়া করিতে হইত। কিন্তু ব্ৰাহ্মণের ছেলে হইলেও ও বিদ্যাটা কখনও বড় বেশী আয়ত্ত করিয়া উঠিতে পারি নাই । থালা, ঘটী, বাটীর নাম গন্ধ বাগানে বড় বেশী ছিল না। প্ৰত্যেকের