পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 নির্বাসিতের আত্মকথা ভৈরবীকে দেখিয়া প্ৰমাদ গণিল। এই সন্ধ্যার সময় তাহার। পৰ্ব্বতপ্ৰমাণ । বিপুল দেহ-ভার লইয়া বেচারা কম্বল ছাড়িয়া যায়ুই বা কোথায় ? ভৈরবীর আপাদ-মস্তক দেখিয়া দেবব্রত জিজ্ঞাসা করিল-“আপনি কি ?” ভৈরবী—“আমি সাধুসঙ্গ করতে চাই।” দেবব্রত—“সাধুসঙ্গ করতে চান ত আমাদের কাছে কেন ? দেখছেন ন। আমরা বাবুলোক ; আমাদের পরণে ধুতি, চোখে সোণার চশমা ?” ভৈরবী—“ত হোক, আমি জানি আপনার ছদ্মবেশী সাধু।” আমরা অনেক করিয়া বুঝাইলাম যে, আমরা ছদ্মবেশী নই, সাধুও নািহ ; কিন্তু ভৈরবী ঠাকুরুণ, সেখান হইতে নড়িবার কোনই লক্ষণ, দেখাইলেন না। শেষে অনেকক্ষণ তর্কবিতর্কের পর দেবব্রতই রণে ভঙ্গ দিয়া সে রাত্ৰি এক গাছতলায় পড়িয়া কাটাইয়া দিল । কিন্তু ভৈরবী হইলে কি হয়, বাঙ্গালীর মেয়ে তা বটে ? সকাল বেলা ঘুরিয়া আসিয়া দেখি, কোথা হইতে চাল ডাল জোগাড় করিয়া ভৈরবী বান্না চড়াইয়া দিয়াছেন । বেলা ১০টা না বাজিতে বাজিতে আমাদের জন্তু খিচুড়ী প্ৰস্তুত। কামিনী-কাঞ্চনে ব্ৰহ্মচর্য্যের ব্যাঘাত ঘটাইতে পারে, কিন্তু কামিনীর রান্না খিচুড়ী সম্বন্ধে শাস্ত্রের ত কোন নিষেধ নাই ; সুতরাং আমরা নিৰ্ব্বিবাদে সেই গরম গরম খিচুড়ী গলাধঃকরণ করিয়া ফেলিলাম। আমাদের পাওয়া দাওয়া শেষ হইলে তৰে ভৈরবী আহার করিতে বসিলেন!! দেখিলাম, বাঙ্গালীর মেয়ের স্নেহন্দুধাতুর প্রাণটুকু গৈরিকের ভিতর দিয়াও ফুটিয়া বাহির হইতেছে। , বিন্ধ্যাচল হইতে চিত্ৰকূটে আসিলাম। ষ্টেসনে নামিতে না নামিতে ছোট বড় মাঝারি অনেক রকমের পাণ্ড আমাদের উপর আক্রমণ করিল। আমরা ম্বে তীর্থ দৰ্শন করিয়া পুণ্য-সঞ্চায়ের বৃদ্ধি করিতে চিত্ৰকুটে আসি নাই, এ কথা ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দীতে অনেকক্ষণ ৰাহুত দিয়া